আজ ১০ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে ছিল অযোধ্যা মামলার শুনানি। কিন্তু শুনানির শুরুতেই বিতর্ক তৈরি হওয়ায় ফের পিছিয়ে গেল এই ঐতিহাসিক মামলার শুনানি। আগামী ২৯ জানুয়ারি চূড়ান্ত শুনানির দিন ঠিক হবে বলে জানিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।
আজ প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ এই শুনানি শুরু হয়। কিন্তু শুরুতেই সাংবিধানিক বেঞ্চে বিচারপতি উদয় ইউ ললিতের থাকা নিয়ে আপত্তি তোলেন আইনজীবী রাজীব ধাওয়ান৷ বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় এই মামলার ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বিচারপতি ললিত। তারপরই চূড়ান্ত শুনানির দিন ঠিক করার জন্য পরবর্তী ২৯ তারিখ বেছে নেয় বিচারপতিদের বেঞ্চ।
এদিন মামলার শুনানির শুরুতেই সকাল ১০টা ৩৯ মিনিট নাগাদ মুসলিম পক্ষের আইনজীবী রাজীব ধাওয়ান সওয়াল শুরু করার অনুমতি চান বেঞ্চের কাছে। তাঁকে থামিয়ে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেন, ‘কী শুরু করবেন? আজকের দিনটা শুনানির জন্য নয়, মামলার চূড়ান্ত শুনানি কবে, সে দিনটা ঠিক করার জন্য।’ সুপ্রিম কোর্ট কেন ৩ সদস্যের বেঞ্চ থেকে ৫ সদস্যের বেঞ্চ গঠন করল সুপ্রিম কোর্টের কাছে জানতে চান ওই মুসলিম পক্ষের আইনজীবী। আইনজীবী ধাওয়ান ওই বেঞ্চের সদস্য বিচারপতি উদয় ইউ ললিতকে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে বিচারপতি ললিত নিজেও বিতর্কিত বাবরি মসজিদ মামলার আইনজীবী ছিলেন। ফলে সে সময় তিনি কোনও এক পক্ষের হয়ে মামলা লড়েছিলেন। পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং-এর আইনজীবীও ছিলেন বিচারপতি ললিত। তাই সাংবিধানিক বেঞ্চে বিচারপতি ললিতের থাকাটা যে উচিত হবে না, সে কথা বেঞ্চকে বলেন আইনজীবী ধাওয়ান। এরপরই তাঁর সঙ্গে সহমত হন বেঞ্চের অন্যান্য বিচারপতিরা। কোর্টের নিরপেক্ষতা নিয়ে এমন প্রশ্ন উঠতেই ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন বিচারপতি ললিত।
এরপর প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ জানান, যেহেতু বিচারপতি ললিত আর ৫ সদস্যের বেঞ্চে নেই এবং বেঞ্চের পাঁচ সদস্য ছাড়া কোনও ভাবেই চূড়ান্ত শুনানির দিন স্থির করা সম্ভব নয়, তাই এই সিদ্ধান্ত। এই সময়ের মধ্যে বিচারপতি ললিতের পরিবর্তে অন্য বিচারপতিকে সদস্য করে নতুন করে বেঞ্চ গঠন করা হবে৷ সেই বেঞ্চেই হবে অযোধ্যা মামলার শুনানি৷
বিচারপতি ললিত ছাড়া প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে শীর্ষ স্তরের ওই বেঞ্চের বাকি সদস্যরা হলেন বিচারপতি এস এ ববড়ে, বিচারপতি এন ভি রমণ ও বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। অন্যদিকে, সুপ্রিম কোর্টে অযোধ্যা মামলার শুনানি শুরু হওয়ার পর এই প্রথম কোনও বেঞ্চ গঠিত হয়েছিল, যাতে কোনও সংখ্যালঘু বিচারপতি ছিলেন না।