কলেজের অধ্যাপকদের অবসরের বয়সসীমা তিন বছর বাড়ানো হল। আগে ছিল ৬২ বছর। তা বাড়িয়ে করা হল ৬৫। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং সহ উপাচার্যদের অবসরের বয়সসীমা বেড়ে দাঁড়াল ৭০। সোমবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে গিয়ে এমনই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অধ্যাপকদের অভিজ্ঞতা বাড়ে। আমি মনে করি না ষাটের পর আর কিছু করার থাকে না। তাই অবসরের বয়সসীমা বাড়ানো হল। তবে, ভাববেন না এর জন্য চাকরির কোনও অভাব হবে। আসলে মানুষের গড় আয়ু এখন ৮৫। তাই ৬০-এর পরেও অনেক কিছু দেওয়ার থাকে। আর শিক্ষকরাই হল মানুষ তৈরির কারিগর। মনুষ্যত্ব তৈরি করাই আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। কারণ ছাত্ররা জাতির ভবিষ্যৎ।
নদীয়ায় প্রায় ২৫ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলা হচ্ছে কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়। ১০ জানুয়ারি নদীয়া সফরে এসে এই কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘নদীয়ায় তৈরি হতে চলা কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংযোগ থাকবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে’। আইনিভাবে এব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে শিক্ষামন্ত্রী এবং উপাচার্যকে উদ্যোগী হতে নির্দেশ দেন মমতা। তিনি আরও জানান, ‘মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েও বিদ্যাসাগরের নামে এবং মহাত্মা গান্ধীর নামে দুটি চেয়ার তৈরি হচ্ছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান এবং সমাজবিজ্ঞান ভবনের জন্য জমি দিচ্ছে রাজ্য সরকার। কলা বিভাগের জন্যও জমির ব্যবস্থা আছে’। এজন্য আইনিভাবে কলা বিভাগকে আবেদনের পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যের কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য অনেক কাজ করেছি। এই রাজ্যের চাকরির অভাব হবে না। আমরা ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমিয়ে এনেছি। আমরা আরও বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ তৈরি করছি। কর্মসংস্থানের জন্য ছেলে-মেয়েদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। আগামী ১০ তারিখ নদীয়ায় কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বোধন করছি’।
শিক্ষায় রাজনীতি নিয়েও এদিন মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে রাজভবনে হওয়া নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, ‘প্রেসিডেন্সির সমাবর্তন ক্যাম্পাসে হবে না, এটা ভাবতেই পারি না৷ আমি শুনেছি, প্রেসিডেন্সির সমাবর্তনের জন্য রাজভবন নেওয়া হয়েছে৷ এই গুলি কেন হবে? সমাবর্তনে রাজ্যপাল গেলে আপত্তি কেন? আমি সৌজন্যের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি’৷ প্রেসিডেন্সির সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল গেলে তাঁকে ঘিরে ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে রাজ্যপালের হাত থেকে শংসাপত্র নিতে অস্বীকারের ঘটনার সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী ছাত্রছাত্রীদের বলেন, ‘সংকীর্ণতা ভেঙে ফেলা উচিত।’