নানা প্রকল্পের সুফল ও ধান বিক্রির চেক কৃষকদের হাতে দ্রুত পৌঁছচ্ছে কিনা, তা নিয়েও বোলপুরের প্রশাসনিক সভায় খোঁজখবর নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার থেকে ফসলবিমার টাকা পুরোটাই রাজ্য দেবে বলেও ঘোষণা করেছেন তিনি। বীরভূম জেলায় পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা কেন বাড়ছে তা নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনকে ধমক দেন মমতা।
বুধবার বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে বীরভূম জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে বসেছিলেন দিদি। সেখানে নলহাটি, রামপুরহাট, সিউড়ি, বোলপুর-সহ জেলার ছটি পুরসভার চেয়ারম্যানকে মুখ্যমন্ত্রী জিজ্ঞেস করেন, কাজ কেমন হচ্ছে? এলাকা সাজানো গোছানো, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হচ্ছে কি না জানতে চান। এরপরই হঠাৎ সরকারের এক শীর্ষ কর্তাকে বলতে শুরু করেন, “হাওড়া কর্পোরেশন এলাকায় খোঁজ নিন। ওখানে আবর্জনা পরিষ্কার হচ্ছে না। আজকে সকাল থেকে অন্তত দশটা ফোন এসেছে এই নিয়ে। প্রশাসক কী করছেন? কাউন্সিলররা ছিলেন। তাঁরা তো তবু এই কাজগুলো করতেন। তেমন যদি হয় একটা কমিটি করে দিতে বলুন। ওই কমিটি এই কাজগুলো দেখবে।
প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা প্রশ্ন করেন, ‘বীরভূমে প্রচুর পরিমাণে পথ দুর্ঘটনা হয়ে থাকে৷ বেশিরভাগ তারাপীঠ থেকে ফেরার পথে এই পথ দুর্ঘটনাগুলি হয়৷ তার জন্য কি ব্যবস্থা নিয়েছেন?’ এর পরেই জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং-এর কাছ থেকে গত বছর পথ দুর্ঘটনায় কত লোকের মৃত্যু হয়েছে তার হিসাব জানতে চান তিনি৷ পরিসংখ্যান বলছে ২০১৭ জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পথ দুর্ঘটনায় জেলাতে মৃত্যু হয়েছে ২৭৮ জন এর এবং ২০১৮ সালে জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ২৯৮ জন৷
যারা মোবাইল হাতে গাড়ি চালাবে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন মমতা। বৈঠক থেকেই জেলা পুলিশ সুপার মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, এই বছর পথ দুর্ঘটনা রুখতে যা যা ব্যবস্থা নেওয়া যায়৷ আমরা সব রকম ব্যবস্থা নেব৷
কৃষকরা ধান বিক্রি করার পর চেক যেন আটকে না থাকে। এনিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন আগেই। বুধবার, বোলপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে নিজেই তার খোঁজ খবর নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘রাজ্য টাকা দিচ্ছে, নাম কিনছে কেন্দ্র৷ ফসলবিমার টাকা তাই কেন্দ্র থেকে নেব না৷ ফসলবিমা নিয়ে রাজনীতি চাই না৷ ১৮-৬০ বছর পর্যন্ত কৃষকের মৃত্যুতে সাহায্য করা হবে৷ মৃতের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা মৃত্যুর ১৫ দিনের মধ্যে আর্থিক সাহায্য দেবে রাজ্যসরকার৷ একর প্রতি বছরে ২ বার ৫ হাজার টাকা৷ ধান দিন, চেক নিন প্রথা চালু হবে৷ কৃষকদের বিষয়টি বোঝাতে হবে৷ জেলার খরাপ্রবণ এলাকায় নজর দিন৷ জল ধরো,জল ভরো প্রকল্পে লাভ হচ্ছে৷ বীরভূমে এই প্রকল্পে জোর দিন৷ বীরভূমে হাঁস প্রতিপালনে জোর দিন’৷