বুলন্দশহরে হওয়া হিংসা কাণ্ড নিয়ে এবার বড়সড় চাপের মুখে যোগী আদিত্যনাথ। ‘বুলন্দশহরের হিংসা কান্ড রুখতে ব্যর্থ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী’ এমন অভিযোগ এনে এবার যোগী ও তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগ দাবি করে খোলা চিঠি দিলেন রাজ্যের ৮৩জন প্রাক্তন আমলা। চিঠিতে স্পষ্ট লেখা হয়েছে, ‘সংবিধানের যে ধারা মানার শপথ তিনি নিয়েছিলেন, তা মানতে ব্যর্থ হওয়ায় আমরা মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি।’
প্রসঙ্গত, ৩ ডিসেম্বর গোহত্যার অভিযোগে প্রবল হিংসার ঘটনা ঘটে বুলন্দশহরের সিয়ানায়। প্রায় শ’চারেক ব্যক্তির হামলায় প্রাণ যায় সুমিত নামে এক তরুণ ও পুলিশ অফিসার সুবোধ কুমার সিংয়ের। ওই ঘটনায় গো হত্যাকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন যোগী আদিত্যনাথ। এমন মন্তব্যের পরই দেশের ৮৩ জন প্রাক্তন আমলা খোলা চিঠি লিখে আদিত্যনাথের পদত্যাগের দাবি করেছেন।
যাঁরা আদিত্যনাথের পদত্যাগ দাবি করেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন বিদেশসচিব ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্ঠা বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান শ্যাম শরণ, প্ল্যানিং কমিশনের প্রাক্তন সচিব এনসি সাক্সেনা, সুইডেনে প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত সুশীল দুবে, ইতালির প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত কেপি ফাবিয়ান, পাঞ্জাবের রাজ্যপালের প্রাক্তন উপদেষ্টা জুলিয়ো রিবেইরো, প্রাক্তন স্পেশ্যাল ডিরেক্টর জেনারেল রাজদ্বীপ সিং-সহ দেশের অন্যান্য বিশিষ্ট প্রাক্তন আমলারা।
চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘অসত্ উদ্দেশ্যে বুলন্দশহরে গণহিংসা গড়ে তোলা হয়েছে। যে পুলিশ অফিসার একা হাতে হিংসা থামানোর চেষ্টা করেছিলেন, তাঁকে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে। যা মারাত্মক! কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ এমন গুরুতর ঘটনাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। পাশাপাশি তিনি সাম্প্রদায়িক হিংসাকেও গুরুত্ব দেননি। ওই ঘটনায় হামলাকারীদের নিন্দা করেননি বা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেননি। তার পরিবর্তে গো হত্যার সঙ্গে কারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এই পদক্ষেপ দেখিয়ে দেয় রাজ্যে সাংবিধানিক মূল্যবোধ নষ্ট হচ্ছে। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি করছি।‘
উল্লেখ্য, এই খোলা চিঠিতে সই করা ৮৩ জন প্রাক্তন আমলার মধ্যে ৬০জন আইএএস অফিসার, ৫ জন আইপিএস অফিসার এবং ১৫জন আইএফএস অফিসার। জানা গেছে, এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার জন্য এলাহাবাদ হাইকোর্টের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।