‘মৌন-মোহন’, প্রাক্তনকে হামেশাই এই নামে সম্বোধন বলে থাকেন দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীনও এমন কটাক্ষ তাঁকে কম শুনতে হয়নি। কিন্তু অবশেষে নিজের এমন নামকরণের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন স্বয়ং মনমোহন সিং। তিনি স্পষ্ট জানালেন, ‘সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে আমি কখনও ভয় পেতাম না।’
মঙ্গলবার নিজের বই ‘চেঞ্জিং ইন্ডিয়া’-র প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন বলেন, ‘আমি এমন প্রধানমন্ত্রী ছিলাম না, যিনি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে ভয় পেতেন। আমি নিয়মিত সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হতাম, তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতাম। প্রতিটি বিদেশ সফর থেকে ফিরে আমি সাংবাদিক বৈঠক করতাম। আমার বইতে সেরকম অনেকগুলি বৈঠকের উল্লেখ রয়েছে।’
‘সরব’ মনমোহন আরও বলেন যে, ‘অনেকে বলেন, আমি মৌন প্রধানমন্ত্রী ছিলাম। তবে আমার ধারণা এই বইয়ের পাঁচটি খণ্ডই সে বিষয়ে কথা বলবে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমার কৃতিত্ব নিয়ে আমি অহংকার করতে চাই না বা বড়াই করতে চাই না। কিন্তু সেই কৃতিত্বের কথাই এই বই বলবে। কারণ প্রতিটি ঘটনারই পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ রয়েছে এই বইতে।’
প্রসঙ্গত, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মনমোহনকে একাধিকবার ‘মৌন-মোহন’ বলে কটাক্ষ করলেও, ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর তিনি নিজেই কোনও সাংবাদিক বৈঠক করেননি। যা নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁকে। ক’দিন আগে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীও কটাক্ষ করে বলেছিলেন, মোদী সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হতে ভয় পান।
আবার বড় কোনও ঘটনার ক্ষেত্রেও সংবাদমাধ্যমের সামনে সাধারণত নীরব থাকতেই দেখা যায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে। এ নিয়েই মোদীকে এবার একহাত নিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন। নাম না করে মোদীর উদ্দেশ্যে তাঁর মন্তব্য, ‘একদিন চেষ্টা করুন। কারণ নিজের দিকে প্রশ্ন ছোঁড়া হলে বেশ মজাই লাগে।’
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও কেন্দ্রের মতান্তর প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ভারতে উদার অর্থনীতির রূপকার মজা করেই বলেন, ‘আরবিআই আর সরকারের সম্পর্কটা অনেকটা স্বামী-স্ত্রীর মতো। মতভেদ মিটিয়ে নিলে তবেই তারা একসঙ্গে কাজ করতে পারবে।’