এবার গোটা দেশের সামনে এ রাজ্যের উন্নয়নের মডেল তুলে ধরতে এবং একইসঙ্গে বাকি রাজ্যগুলিকেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন মন্ত্রে দীক্ষিত করতে এক অভিনব পন্থা নিল তৃণমূল। উন্নয়ন এবং রাজনৈতিক বার্তা প্রচারে সদ্যই ডিজিটাল মাধ্যমে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে চলেছে তারা। গত ১০ ডিসেম্বর থেকে প্রতিযোগিতায় নাম নথিভুক্ত করা শুরু হয়েছে। চলবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। আবেদন অনলাইনে জমা দিতে হবে।
তবে এখানেই শেষ নয়। জানা গেছে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের ময়দানে দলের গুরুত্ববৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে এই কর্মসূচিকে সর্বভারতীয় রূপ দিয়েছে এআইটিসি মিডিয়া সেল। তাই যে কোনও ভারতীয় নাগরিক নিজের মাতৃভাষায় এই ডিজিটাল প্রতিযোগিতায় নাম দিতে পারবেন। ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারকারীদের সৃজনশীলতার বিকাশের সুযোগ করে দেওয়াই এই প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য।
সংগঠনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বরাবরই বলে থাকেন ডিজিটাল মিডিয়ার গুরুত্বের কথা। নিজেদের পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় করার কথাও তিনি বলেছিলেন দলের তরুণ প্রজন্মকে। সেই লক্ষ্যেই রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রে প্রশিক্ষিত ডিজিটাল সৈনিক তৈরি করেছে তৃণমূলের ডিজিটাল মিডিয়া সেল। একইসঙ্গে নেওয়া হচ্ছে নানা ধরনের কর্মসূচিও।
প্রসঙ্গত, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় ফেসবুক লাইভ করে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছিল তৃণমূল। আবার বাংলার ছাত্রছাত্রী ও যুবসমাজের মধ্যে ডিজিটাল মাধ্যম সম্পর্কে সচেতনতার প্রসার ঘটাতে এবং নব প্রজন্মকে আরও বেশি করে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় ব্রতী করে তুলতে ক্যুইজ প্রতিযোগিতাও শুরু করেছে তারা। আর এবার শুরু হতে চলেছে ‘এআইটিসি ডিজিটাল ট্যালেন্ট হান্ট’।
মিডিয়া সেলের যুগ্ন আহ্বায়ক দীপ্তাংশু চৌধুরী জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো বাংলা-সহ গোটা দেশে প্রায় ৩০ লক্ষ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যহারকারীকে এই প্রতিযোগিতায় সঙ্গী করতে চান তাঁরা। তাঁর কথায়, বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি, উর্দুর পাশাপাশি দেশের যে কোনও প্রাদেশিক ভাষায় প্রতিযোগীরা অংশ নিতে পারেন।
কী থাকবে ওই প্রতিযোগিতায়? দীপ্তাংশুর উত্তর, ভিডিও, ইনফোগ্রাফিক্স, লিখিত কোনও বিষয় পাঠানো যেতে পারে। বাংলার কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী, রূপশ্রী ইত্যাদি সামাজিক প্রকল্প নিয়ে তৈরি হতে পারে এইসব ভিডিও কিংবা নিবন্ধ। এছাড়া সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয়ে তৃণমূলের অবস্থান বা নেত্রীর বক্তব্য সম্পর্কেও ডিজিটাল মাধ্যমে পোস্ট করা যাবে। কে কতটা আকর্ষণীয়ভাবে সেই কাজ করবে, তার উপরেই নির্ভর করে তাঁর ফল। পাঁচ সদস্যের জুরি বোর্ড নানা বিভাগের মধ্যে প্রথম তিনজনকে বাছাই করে পুরস্কার দেবে।
দলের এক শীর্ষ নেতার মতে, দলীয় পরিসরের বাইরে একটা বড় অংশ, বিশেষত তরুণ প্রজন্ম রয়ে গিয়েছে। তারা মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নমুখী কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত হয়ে বিভিন্ন সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা বিষয় লেখা ও ছবি পোস্ট করে থাকে। এইসব মানুষকে সংগঠিতভাবে এক মঞ্চে নিয়ে আসার লক্ষ্যে এই ধরনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।