গোবলয়ে গেরুয়া শিবিরের সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কার্যত শিল্পের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। সেই হৃদয়েই শেল হয়ে বিঁধল কংগ্রেস। অনায়াসেই ছত্তীসগঢ় ছিনিয়ে নিল কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের শেষে হাসলেন রাহুল গান্ধীই। কংগ্রেস নেতারা ইতিমধ্যেই বলতে শুরু করে দিয়েছেন, লোকসভা ভোটেও বিজেপির পতন নিশ্চিত।
একটা কথা বলাই যায়, মোদীর ক্যারিশ্মা অবিসংবাদী নয়। প্রশ্নের মুখে মোদী-শাহের রণকৌশলও। কারণ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ় ও মধ্যপ্রদেশে ৫৬ ইঞ্চির ছাতি ফুলিয়ে প্রচার করে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর বিজেপির সেরা প্রচারমুখকেও ছাপিয়ে দিয়েছেন অমিত শাহ। নরেন্দ্র মোদীর থেকেও বেশি রোড শো ও সভা করেছেন তাঁর সেনাপতি। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি কোনও। পাঁচ রাজ্যেই কার্যত ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। ফলে আগামী লোকসভা ভোটে মোদী-শাহের জন্য যে কঠিন চ্যালেঞ্জ যে অপেক্ষা করে রয়েছে, তা বলাই বাহুল্য।
মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ় গত ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। স্বাভাবিকভাবেই প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া জোরালো ছিল। সেই হাওয়াতে ভর করে ছত্তীসগঢ়ে বিজেপিকে কুপোকাত করেছে কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশে ‘মামা’কে ছেড়ে ‘মহারাজে’ আস্থা রেখেছেন ভোটাররা। কিন্তু সে রাজ্যে ১৫ বছর শাসন করার পরও সহজে হারানো যায়নি শিবরাজকে। গত ২৫ বছর ধরে রাজস্থানে দ্বিতীয়বার কোনওদল ক্ষমতায় ফেরেনি। ‘রানি’র উপরে বীতশ্রদ্ধ ছিলেন আম ভোটাররা। এর উপরে আবার মন্দির ভাঙাকে কেন্দ্র করে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীর উপরে ক্ষেপে গিয়েছিল হিন্দু ও জৈন সম্প্রদায়ের মানুষ। ভোটের প্রচারে শোনা গিয়েছিল, ‘মোদী তুজঝে বৈর নেহি, রানি তেরি খ্যার নেহি’। অর্থাত্ নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে শত্রুতা নেই, বসুন্ধরা রাজেকে নিয়েই বীতশ্রদ্ধ ভোটাররা।
সেমিফাইনালের লড়াইয়ে লোকসভা ভোটে কি কোনও ফারাক পড়বে? রাহুল গান্ধী দাবি করেছেন, এই ভোটের ফল দেখিয়ে দিল, আসন্ন লোকসভা ভোটে আর ক্ষমতায় ফিরছেন না নরেন্দ্র মোদী। রাজনৈতিক মহলের মতে, লোকসভার আগে নিঃসন্দেহে একটা ধাক্কা খেল বিজেপি।