আবারও প্রকাশ্যে এল বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এমনিতেই বীরভূম জেলায় বিজেপি বনাম বিজেপি কোন্দল লেগেই থাকে। এবার সেখানেরই নলহাটিতে বিজেপির এক গোষ্ঠীর ভয়ে সভা বাতিল করতে হল আরেক গোষ্ঠীকে। অবস্থা বেগতিক দেখে খোদ এই সিদ্ধান্ত নিলেন বীরভূম জেলা সভাপতি।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপির রথযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে রবিবার সকালে বীরভূমের নলহাটিতে একটি সভার আয়োজন করা হয়। সেই দলীয় কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকার কথা ছিল জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের।
সভার খবর পেয়ে নলহাটিতে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া শিশুমন্দির বিদ্যালয়ে সভাস্থলের সামনে হাজির হয়েছিলেন বিজেপির শতাধিক কর্মী। তাঁদের প্রায় প্রত্যেকের হাতেই ছিল কালো পতাকা। জেলা সভাপতিকে গো ব্যাক স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি কালো পতাকা দেখাবেন বলেই অপেক্ষা করছিলেন তাঁরা।
তবে রামকৃষ্ণ রায় অশান্তির আগাম খবর পেয়েই তড়িঘড়ি সেই কর্মসূচি বাতিল করে দেন। এবং নিজেও ওই সভাস্থলের ছায়া মারাবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। ফলে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার পরও জেলা সভাপতি না আসায় কালো পতাকা হাতে ওই বিক্ষুব্ধ কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে দেন।
বিক্ষোভকারী বিজেপি নেতা তথা গত নলহাটি পুরসভা নির্বাচনে ৩ নং ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমাদের দলের জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের ভুল নেতৃত্বে এই জেলায় বিজেপি ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে। স্থানীয় নেতৃত্বকে না জানিয়েই উনি একটা কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন। এর বিরোধীতায় আমরা কালো পতাকা দেখিয়ে গো ব্যাক স্লোগান দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি শুনেই উনি ভয়ে এ’মুখো হননি। ওঁকে আমরা আমাদের নেতা হিসাবে মানি না। দলকে বাঁচাতেই আমরা ওঁর অপসারণ চাই।’
অস্বস্তি এড়াতে রামকৃষ্ণ রায় বলেন, ‘রথযাত্রা নিয়ে আমাদের একটা কর্মসূচি ছিল। কিন্তু কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকায় এই কর্মসূচি বাতিল করতে হয়েছে। এর পাশাপাশি যেহেতু ১৪ তারিখ ফের হাইকোর্টে রথের শুনানি আছে তাই সোমবার ও আমাদের দুটি জায়গায় কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে৷ এ নিয়ে কারা কি করল তা আমি জানি না। তবে যাঁরা এই ধরণের আন্দোলন করছেন, তাঁরা আসলে বিজেপির ক্ষতিই করছেন।’
গেরুয়া শিবিরের দু’পক্ষের মধ্যে এমন দোষারোপের পালা চলছেই। একইসঙ্গে জনসমক্ষে চলে এল তাদের সংগঠনের বেহাল দশা।