ধর্ম নিয়ে নয়, উন্নয়ন নিয়ে লড়াই করুক বিজেপি। ডায়মন্ড হারবারের সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে এই ভাষাতেই তোপ দাগলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় ডায়মন্ড হারবারে গঙ্গার পাড়ের সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের শিলান্যাস করতে এসেছিলেন স্থানীয় সাংসদ এবং সর্বভারতীয় তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি অভিষেক। সেখানেই তিনি বলেন, ‘বিজেপির রথ হল ফাইভ স্টার এসি বাস। সেই এসি বাসে চড়ে বাংলায় ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে চাইছে বিজেপি।’ এরপরই তিনি বলেন, ‘ধর্ম নিয়ে নয়, লড়াই হোক উন্নয়ন নিয়েই।’
রাজ্য পর্যটন দফতরের উদ্যোগে ডায়মন্ড হারবার শহরের হুগলি নদীর পাড় ও পুরনো কেল্লাকে নতুন করে পর্যটকদের উপহার দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেন অভিষেক। ডায়মন্ড হারবারের গঙ্গার পাড়ের সৌন্দর্যায়ন অস্ট্রেলিয়ার সি হারবারের ধাঁচে হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন তিনি। সেই মতো গতকাল হুগলি নদীর পাড়ে পুরনো কেল্লার মাঠে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে প্রকল্পের শিলান্যাস করেন তিনি। উপস্থিত ছিলেন সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তী, সভাধিপতি শামিম সেখ, বিধায়ক দীপক হালদার, তমোনাশ ঘোষ, দিলীপ মণ্ডল, জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও-সহ বিশিষ্টরা।
প্রসঙ্গত, ডায়মন্ড হারবারের গঙ্গার পাড় বরাবর সৌন্দর্যায়নের কাজ দীর্ঘদিন হয়নি। সেখানে রাজ্য ও কেন্দ্র উভয়েরই অংশ পড়ে। অভিষেকের অভিযোগ, কেন্দ্রকে বারবার তার অংশের সৌন্দর্যায়নের কাজ করতে বলেও লাভ হয়নি। একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত এই প্রকল্পের জন্য রেল ও সেনাবাহিনীর কিছু জমির প্রয়োজন ছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জমির আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তবে সেকারণে উন্নয়ন আটকে থাকবে না। উন্নয়ন করে আমরা দেখিয়ে দেব। ইতিমধ্যে ডায়মন্ড হারবার জুড়ে সেই উন্নয়ন প্রমাণিত।’ অভিষেকের প্রতিশ্রুতি, রাজ্যের অংশটুকুর পাশাপাশি কেন্দ্রের অংশের সংস্কার কাজটুকুও তিনি নিজেই করে দেবেন।
প্রকল্প সম্পর্কে বলতে গিয়ে অভিষেক জানান, ‘প্রথম পর্যায়ে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ১৩ কোটি ব্যয় হবে। সব মিলিয়ে ২৫ কোটি টাকার প্রকল্পে সাজবে নদীর পাড়। থাকবে নদীর ওপর ঝুলন্ত ব্যালকনি। থাকবে ভাসানঘাট। পাড়ের মন্দিরগুলোকে সংস্কার করা হবে। উচ্ছেদ নয়, আধুনিক স্টল করে দেওয়া হবে দোকানদারদের। কোনও গাছও কাটা হবে না। স্থানীয় কপাটহাট থেকে রাজারতালুক পর্যন্ত জাতীয় সড়কের পাশে ফুটপাথ তৈরি করা হবে। দেড় বছরের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।’
এরপরই সমালোচনার তিরে কেন্দ্রকে বিঁধে অভিষেক বলেন, ‘গুজরাটে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মূর্তি তৈরি করেছে কেন্দ্র সরকার। এই মূর্তি না গড়ে দেশের ৮০ শতাংশ খেতে না পাওয়া মানুষকে সেই অর্থ দান করলে অনেকটা উপকার হতো। আমাদের ৩ কোটি টাকাও দিতে হবে না। ১ কোটি দিলেই আমরা উন্নয়ন করে দেখিয়ে দেব।’ নাম না করেই বিজেপির উদ্দেশ্যে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘আগুন নিয়ে খেলবেন না। কার কী ওষুধ আমরা জানি। একটি রাজনৈতিক দল আমাদের বিরুদ্ধে তোষণের অভিযোগ করেন। তাদের বলি, আমরা তোষণের রাজনীতি করি না। আমরা উন্নয়ন বুঝি।’