রেল মন্ত্রক এবং কেন্দ্রের গা-ছাড়া মনোভাবের জন্য চরম হয়রানির শিকার প্রায় ৩৬ লক্ষেরও বেশি পরীক্ষার্থী। আবারও পিছিয়ে গেল রেলের অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকো পাইলট এবং টেকনিশিয়ানস নিয়োগের দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা।
এএলপি এবং টেকনিশিয়ানসের ৬৪ হাজার ৩৭১টি শূন্যপদে নিয়োগের জন্য গত ৯ আগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একমাসব্যাপী পরীক্ষা নিয়েছিল রেলমন্ত্রক। দেশের মোট ৪৪০টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা হয়েছিল। যাতে অংশ নিয়েছিলেন মোট ৩৬ লক্ষ ৪৭ হাজার ৫৪১ জন পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা শেষের দু’মাস পরে গত ২ নভেম্বর এর ফলাফল প্রকাশ করে আরআরবি। এবং তাতে মোট ৫ লক্ষ ৮৮ হাজার ৬০৫ জন পরীক্ষার্থীকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করে জানানো হয়, সফল ছাত্রছাত্রীরা এবার দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষায় বসার যোগ্যতা পেলেন। সেইসময় যে পরীক্ষার নির্ধারিত দিন ছিল ১২ থেকে ১৪ ডিসেম্বর। ওই ফলাফল প্রকাশের কয়েকদিন পরেই সংশ্লিষ্ট রেজাল্টে গরমিলের অভিযোগ ওঠে। যে মূল উত্তরপত্রের উপর ভিত্তি করে পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে, তারই অনেক উত্তরে ভুল থাকার অভিযোগ তোলেন পরীক্ষার্থীদেরই একটি বড় অংশ। এবং যার জেরে রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ড নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেয়, সবকিছু খতিয়ে দেখে সংশোধিত ফলাফলের তালিকা প্রকাশ করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার দিনও পিছিয়ে ২৪ ডিসেম্বর ধার্য করা হয় তখন। এবার ফের তা পিছিয়ে যাওয়ায় অভিযোগের আঙুল উঠছে কেন্দ্র এবং রেলমন্ত্রকের দিকে।
মাসখানেক পরেও উল্লিখিত শূন্যপদে নিয়োগের প্রথম পর্যায়ের কম্পিউটার ভিত্তিক (সিবিটি) পরীক্ষার সংশোধিত ফলাফল প্রকাশ করতে ব্যর্থ হল রেলমন্ত্রক। রীতিমতো বিবৃতি জারি করে রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের (আরআরবি) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ২১ থেকে ২৩ জানুয়ারি এর দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা হবে। এই নিয়ে দু’বার এএলপি/টেকনিসিয়ানসে শূন্যপদে নিয়োগের দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার দিন পিছিয়ে দিল রেলমন্ত্রক।
যদিও এই অভিযোগ থেকে নিজেদের বাঁচাতে বিভিন্ন অজুহাত দিচ্ছে রেলমন্ত্রক। তারা জানিয়েছেন, প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষার ফল ঘোষণা এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শুরুর দিনের মধ্যে অন্তত মাসখানেক সময় হাতে রাখা প্রয়োজন। না হলে পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা থাকে। সেই কারণেই পরীক্ষার দিন আরও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের এই পরীক্ষা হবে মোট আড়াই ঘণ্টার। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য এক তৃতীয়াংশ নম্বর কাটা যাবে। যাবতীয় তথ্য পরীক্ষার্থীরা আরআরবি’র সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট থেকেই পেয়ে যাবেন বলে রেল জানিয়েছে।
আবারও বেআব্রু হয়ে গেল সাধারণ মানুষের প্রতি কেন্দ্রের গাফিলতির মনোভাব। তথ্য না হয় ওয়েবসাইট থেকে জানা গেল। কিন্তু পরীক্ষা কবে হবে? নাকি আবারও কোনও গাফিলতির জন্য ধাক্কা খাবে এতজন চাকরি প্রার্থীর ভবিষ্যৎ? উত্তর লুকিয়ে আছে কেবল রেলমন্ত্রকের অন্দরে।