‘ওখানে একশো জনকে কাজে লাগান। যারা সৈকত পরিষ্কার রাখবেন। কিন্তু তাঁরা যেন কাজ করেন। ফাঁকি মারলে হবে না। আর কাজ না করলে যদি কোনও নেতা বলে আমি সামলে নেব, তা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না’। আজ বৃহস্পতিবার দীঘায় প্রশাসনিক বৈঠকের মঞ্চ থেকে এভাবেই শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন বৈঠকের শুরুতেই বক্তব্য পেশ করেন বণিক সমাজের এক প্রতিনিধি। হলদিয়ায় শিল্পের গ্রাফ উর্দ্ধমুখী হওয়া থেকে দূষণের মাত্রা কমেছে বলেও জানান তিনি। তারপর বণিক সমাজের প্রতিনিধিদের পূর্ব মেদিনীপুরের বন্দর শহর হলদিয়া ঘুরিয়ে দেখানোর প্রস্তাব দেন মমতাকে। তৎক্ষণাৎ সম্মতি দেন মমতা। মঞ্চে উপস্থিত প্রশাসকদের খুব শীঘ্রই হলদিয়ায় শিল্প সম্মেলনের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন তিনি। তারপর বণিক সমাজের প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারাও আপনাদের বন্ধু-বান্ধবদের বলুন’। মমতা জানান, গত এক বছরে ১৭ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে হলদিয়ায়। পাইপলাইনে রয়েছে আরও সাত হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ।
রাজনৈতিক বিশ্লেশকদের মতে, প্রশাসনিক সভায় দাঁড়িয়ে বণিক সমাজের প্রতিনিধির এমন বক্তব্য নিঃসন্দেহে রাজ্যের ভাবমূর্তির পক্ষে ইতিবাচক। একদা এই হলদিয়ায় ছিল লক্ষ্মণ শেঠদের একাধিপত্য। অনেকে বলেন, হলদিয়ার দূর্গাচকের সিপিএমের দলীয় কার্যালয় থেকেই যা নিয়ন্ত্রণ করা হতো। কিন্তু এ দিন প্রশাসনিক সভায় স্থানীয় শিল্পপতি ও শিল্পকর্তাদের দাবি, হলদিয়া এখন অনেকটাই বদলে গিয়েছে। হলদিয়া এখন কাজ ও ‘গ্রোথ’-এর জায়গা।
জঙ্গলমহলের তিন জেলা ও দুই বর্ধমানের জেলা সফর শেষ করে সোমবার থেকে ফের জেলা সফরে বেরিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পশ্চিম মেদিনীপুর হয়ে আপাতত তিনি পূর্ব মেদিনীপুরে। বুধবার বাজকুলে সরকারি সভাও করেন মমতা। আজ বৃহস্পতিবার দীঘায় প্রশাসনিক বৈঠক করে জেলায় শিল্প বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি পরিচ্ছন্ন রাখারও বার্তা দিলেন মমতা। পাশাপাশি দীঘা সমুদ্রের জগন্নাথ ঘাটের সৌন্দর্যায়নে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। জগন্নাথ ঘাটের পাশে ছোট জগন্নাথ মন্দিরও আছে। সেই মন্দিরটি নতুন করে সাজানোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এজন্য দ্রুত পরিকল্পনা তৈরি করে তা সচিবের কাছে জমা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘এই যে লোকে পুরী দর্শনে যায়। সমুদ্র দেখে, রথও দেখে, কলাও বেচে আবার জগন্নাথ মন্দিরও দর্শন করে। এখানে যখন সুযোগ আছে তখন সেটা আমাদের করতে হবে’।