গতবারের মতো এই লোকসভা নির্বাচনেও যে ফের রামমন্দির ইস্যুকেই রাজনৈতিক হাতিয়ার করতে চায় বিজেপি, তা আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। যদিও পূর্ব প্রতিশ্রুতি মতো এতদিনেও রামমন্দির তৈরির কাজ শুরুই করতে পারেনি তারা, তবে ভোটের আগে সেই দায় ঝেড়ে ফেলবার এক নতুন কৌশল নিল গেরুয়া শিবির। রাবণ নয়, এবার তারা ‘রাম’-এর শত্রু হিসেবে দেগে দিল জঙ্গি নেতা মাসুদ আজহারকে।
অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরিতে নাকি বাধা দিচ্ছে লস্করের জঙ্গি নেতা মাসুদ আজহার। সে নাকি পাকিস্তান থেকে ইন্ধন জোগাচ্ছে ভারতের মুসলিমদের। এমনই এক ‘গোপন খবর’ জনতার সামনে এনে রাজস্থানে নির্বাচনী প্রচারের সভা থেকে রীতিমত হুঁশিয়ারি দিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা হিন্দুত্বের ‘পোস্টার বয়’ যোগী আদিত্যনাথ। তিনি বলেন, রামমন্দির তৈরির পথে বাধা হলে দ্বিতীয়বার সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হবে পাকিস্তানে! এবং সেই সার্জিকাল স্ট্রাইকে মাসুদ আজহারের মতো পাকিস্তানি জঙ্গিদের নিকেষ করা হবে।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরিই বিজেপির কাছে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আরএসএস তো রয়েছেই। শরিক শিবসেনা এবং বিশ্বহিন্দু পরিষদের কাছেও বারবার ভর্ৎসনা শুনতে হয়েছে মোদী সরকারকে। শিবসেনা তো রীতিমত হুঁশিয়ারি দিয়েছে ২০১৯-এর মধ্যে অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরির কাজ শুরু না হলে দ্বিতীয়বারের জন্য আর ক্ষমতায় ফিরবেন না মোদী। কারণ অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েই নাকি ক্ষমতায় এসেছিলেন তিনি।
ফলে এতদিনেও অযোধ্যার রামমন্দির তৈরির কাজ শুরু করতে না পারার দায় ঝেড়ে ফেলে শরিকদের কাছে আস্থা অর্জন করতে এখন মরিয়া মোদী অ্যান্ড কোম্পানী। রাজনীতির কারবারিদের মতে, সেই কারণেই রামমন্দির ইস্যুতে পাক জঙ্গি মাসুদের ওপর নিজেদের ব্যর্থতার দায় চাপাচ্ছে বিজেপি। একইসঙ্গে পাকিস্তানের প্রতি দেশবাসীর ক্ষোভ উস্কে দিয়ে ‘পাক জঙ্গিনিধন’-এর মতো ভুঁয়ো প্রতিশ্রুতিও নিজেদের নির্বাচনী ইস্তেহারে রাখতে চাইছে তারা।