রাজ্যের মানুষের সুবিধার দিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বদাই নজর দিয়ে থাকেন। বিভিন্ন নতুন পদক্ষেপ প্রায়ই নিয়ে থাকেন তিনি। তাই এয়ারপোর্ট অথরিটির ডিরেক্টর নবান্নে এসে মুখ্যসচিব মলয় দে’র সঙ্গে বৈঠক করার পরেই মমতা রাজ্যের দ্বিতীয় বিমানবন্দর গড়ে তোলার নির্দেশ দেন। আপাতত সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী, নতুন বিমানবন্দরটি হতে চলেছে নৈহাটিতে৷
সূত্রের খবর অনুযায়ী, এয়ারপোর্ট অথরিটির ডিরেক্টর জানান যে, কলকাতা বিমানবন্দরে বিমান এবং যাত্রী দুইয়ের সংখ্যাই বেড়েছে। তাই অথরিটি দ্বিতীয় এয়ারপোর্টের আবেদন জানায়। দূরত্বের কারণে অন্ডালে বিমানবন্দরের পরিকল্পনা বাতিল হয়ে যায়। কলকাতা বিমানবন্দরের কাছেই নতুন বিমানবন্দরটি গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে কলকাতার কাছাকাছি কমপক্ষে এক হাজার একর জমির খোঁজ করতে শুরু করে রাজ্য সরকার।
তখন নবান্নের শীর্ষকর্তারা জানতে পারেন, উত্তর ২৪ পরগনায় কল্যাণী হাইওয়ের ধারে এ ধরনের জমি আছে। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে যেতেই তিনি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নেতৃত্বে একটি কমিটি করে দেন। সেই কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন, নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক, বারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত, ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিং। আর কমিটির সদস্য সচিব হল জেলাশাসক অন্তরা আচার্য। এই কমিটির দুটি বৈঠক হয়ে গিয়েছে। এর আগে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় যেদিন মারা যান, সেদিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বারাকপুর মহকুমায় বিমানবন্দর করার জন্য জমি আছে বলে প্রস্তাব দিয়েছিলেন তড়িৎ তোপদার। তাই তাঁকেও কমিটিতে রাখা হয়েছে।
নবান্ন চায়, এয়ারপোর্ট অথরিটির প্রস্তাব মেনে যাতে দ্রুত জমির হদিশ দেওয়া যায়। খুব শীঘ্রই নৈহাটির জমির তথ্য দিল্লিতে পাঠানো হবে বলে জানা গিয়েছে। ওই জমি নিচু এবং একফসলি। আলোচনার ভিত্তিতে জমি কিনে নেওয়া হবে। তা অবশ্য কিনবে এয়ারপোর্ট অথরিটি। এর আগে নৈহাটিতে শিল্পতালুকের জন্য ৯৮ একর জমি চিহ্নিত হয়েছে। জলপ্রকল্পের জন্য আলোচনার ভিত্তিতে জমি কেনার কাজ চলছে। জমির খোঁজ পেলে দ্বিতীয় কলকাতা বিমানবন্দর হতে চলেছে বলে মনে করছেন নবান্নের শীর্ষস্থানীয় কর্তাব্যক্তিরা।
কমিটির প্রধান জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন,’আমাদের জমি খুঁজতে বলা হয়েছে। আমরা নৈহাটিতে কাঁপাচাকলাতে জমি দেখেছি। সেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জমি রয়েছে। রয়েছে সরকারি জমি ও ব্যক্তিগত জমি। সব মিলিয়ে প্রায় দু’হাজার একর হবে। জেলাশাসককে ম্যাপ তৈরি করতে বলা হয়েছে। একটি ম্যাপে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জমি সহ সব জমি চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। আর দ্বিতীয় ম্যাপে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জমি বাদ দিয়ে ব্যক্তিগত জমি চিহ্নিত করার কথা বলেছি। দুটি ম্যাপই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। সেখান থেকে অনুমোদন হলে তা দিল্লিতে এয়ারপোর্ট অথরিটির কাছে পাঠানো হবে। আমরা মনে করি, বিমানবন্দর তৈরি হলে এলাকার সামগ্রিক উন্নয়ন আরও হবে।’