সমীক্ষা বলছে, অল্প ভোটের ব্যবধানই রাজ্যের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারে। তাই তেলেঙ্গানার বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই হচ্ছে সেয়ানে-সেয়ানে, এ কথা স্পষ্ট। অবস্থা বেগতিক দেখে তাই বিজেপির জয় নয়, তেলেঙ্গানায় কংগ্রেসের পরাজয় নিশ্চিত করাটাই এখন মূল লক্ষ্য নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের।
শুরুর দিকে বিভিন্ন সমীক্ষায় টিআরএসের বিপুল জয়ের সম্ভাবনার কথা বলা হলেও, এখন আর সেই আশা দেখাচ্ছে না কোনও সমীক্ষার ফলই। পাশাপাশি অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশ ও নবগঠিত তেলেঙ্গানায় বিজেপির উপস্থিতি তেমন উল্লেখযোগ্য নয়।
২০১৪ সালের নির্বাচনে তেলেঙ্গানা বিধানসভার ১১৯টি আসনের মধ্যে মাত্র ৫টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। এই আসনগুলিও হায়দরাবাদের। এবারও সেই সংখ্যা খুব বেশি হেরফের হওয়ার সম্ভাবনা কম। ফলে মূল লড়াই আসলে টিআরএস এবং কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোটের মধ্যেই।
ফলে বিজেপির এখন একটাই লক্ষ্য, কংগ্রেস-টিডিপি-সিপিআই-তেলেঙ্গানা জনসমিতির মহাজোটকে রুখতে হবে। ভাঙন ধরাতে হবে টিআরএস-বিরোধী ভোটের ঐক্যে। সেই লক্ষ্যে হিসেব কষেই সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়ে চলেছেন বিজেপি নেতারা।
গত কয়েকদিন দলের সভাপতি অমিত শাহ, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথরা তেলেঙ্গানা চষে ফেলেছেন। তাঁদের ভাষণে ঝরে পড়েছে হিন্দুত্বের বার্তা, একাধিক উস্কানিমূলক মন্তব্য। তবে এতকিছুর পরেও তেলেঙ্গানার ভোটে বিজেপির উল্লেখযোগ্য সাফল্যের সম্ভাবনা দেখছেন না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
নির্বাচনে টিআরএস কংগ্রেস-টিডিপি জোটকে আক্রমণ করতে গিয়ে উস্কে দিচ্ছে অন্ধ্র-বিরোধী ভাবাবেগ। তবে সে রাস্তায় না হেঁটে শাহ, যোগীরা তাঁদের পরিচিত ঢঙেই ধর্মীয় ভাবাবেগ উস্কে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন কট্টর হিন্দুত্ববাদী নেতা স্বামী পরিপূর্ণানন্দ। লাগাতার সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করে চলেছেন তিনিও।
তাই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, তেলেঙ্গানায় দাঁত ফোঁটাতে পারবে না বিজেপি, এ কথা স্পষ্ট। তাই তারা ধর্মীয় ভাবাবেগকে উস্কে দিয়ে এবং তাদের চিরাচরিত সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে হাতিয়ার করেই ক্রমাগত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।