‘নন্দীগ্রামে সূর্যোদয়ের নামে সিপিএম কীভাবে অত্যাচার চালিয়েছিল, তা সবার জানা৷ সিপিএমের সেই হার্মাদরা আজ বিজেপিতে ঢুকে গিয়েছে৷ এখানে বলে দিলাম, এই হার্মাদরা বাংলার মানুষকে যদি বিরক্ত করে তাহলে সব কটাকে তাড়িয়ে দেব৷ এটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ৷’ আজ বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের বাজকুলের জনসভা থেকে সিপিএম জমানার ‘কলঙ্কিত’ ইতিহাস তুলে ধরে এভাবেই বাম ও বিজেপিকে এক যোগে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নন্দীগ্রাম লাগোয়া বাজকুল কলেজ মাঠে পরিষেবাপ্রদান অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে একগুচ্ছ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। বক্তব্য পেশ করতে উঠে মনে করিয়ে দেন হার্মাদদের সঙ্গে লড়াই করে কীভাবে গ্রামবাসীদের রক্ষা করেছিলেন৷ নন্দীগ্রাম আন্দোলনে ‘গণহত্যা’র প্রসঙ্গে তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ভুলে যায়নি কিছুই৷ সব আমার মনে আছে৷ নন্দীগ্রামে সূর্যোদয়ের নামে সিপিএম কীভাবে অত্যাচার চালিয়েছিল, তা সবার জানা আছে৷ নন্দীগ্রাম, খেজুরি, কোলাঘাট, পটাশপুর, নেতাইয়ের ঘটনা আমি কখনওই ভুলতে পারব না’৷
পূর্ব মেদিনীপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে সিপিএমের সময়কার সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘এই জেলা রক্ত দেয়, কিন্তু মাথা নত করে না। স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে নন্দীগ্রাম-খেজুরি তার প্রমাণ। আমি যতবার নন্দীগ্রামে ঢুকতে গিয়েছি, আমাকে চণ্ডীপুরে আটকে দেওয়া হয়েছে। ঢুকতে দেওয়া হয়নি। হার্মাদরা অ্যাসিড বাল্ব, অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাস্তার উপরে দাঁড়িয়ে থাকত। খেজুরিতে কেউ তো যেতেই পারত না। এমনকী নন্দীগ্রামে যখন সন্ত্রাস চলছে, তখন আমি ঢুকতে চাইলে কোলাঘাটেই আমায় আটকে দেওয়া হয়। সেখানে আবার গেস্ট হাউজের সামনে সব বাস রেখে দিত। আমরা সব টপকে কোনওক্রমে ঢুকতাম। সিপিএম এভাবেই সন্ত্রাস চালাত’।
সিপিএমের অত্যাচার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিজেপিকে বার্তা দেন মমতা৷ বলেন, ‘সিপিএমের হার্মাদরা আজ বিজেপিতে ঢুকে গিয়েছে৷ ওদের থেকে সাবধানে থাকবেন৷ ওরা এখন মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে৷ সংখ্যালঘুদের খুন করে৷ বাঙালিদের তাড়িয়ে দেয়’৷
হিন্দু-মুসলিম তো বটেই, সমস্ত ধর্মের মধ্যে বিজেপি বিভেদ তৈরি করছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘স্বাধীনতার আগে কি হিন্দু ধর্ম ছিল না! আগে কি মানুষ ধর্ম পালন করত না!১ পয়সার হরিদাস আবার বড়বড় কথা’!