কিছুদিন আগেই বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘রাজ্যে বেকারত্ব ৪০% কমে গেছে।’ আগামী ২ বছরের মধ্যে ১২ লাখ কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। আর সেই কথা রাখতেই রাজ্যের যুবক-যুবতীদের সুখবর দিলেন তিনি। গোটা রাজ্য জুড়ে প্রায় ৭ হাজার শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জঙ্গলমহলে গিয়ে বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনের নেতাদের সাথে বৈঠক করেছিলেন, সেখানে শিক্ষক নিয়োগের আর্জি জানিয়েছিলেন নেতারা। তাঁদের কথা মাথায় রেখেও মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা বলে জানা গেছে।
শুক্রবার ‘মন্ত্রীসভার বৈঠকে এই প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। বৈঠকের পরে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘মন্ত্রীসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, প্রাথমিক এবং উচ্চপ্রাথমিক স্তরে ৬ হাজার ৫৯৪ জন শিক্ষক নেওয়া হবে। ২ হাজার ১৯৮টি উচ্চ–প্রাথমিক বিদ্যালয় তৈরি করা হয়েছিল। সেই বিদ্যালয়গুলিতে পড়ানোর জন্য শিক্ষকদের এই নতুন পদগুলি তৈরি করা হয়েছে। হিন্দি, বাংলা এবং অলচিকি পড়ানোর জন্য শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। এ ছাড়াও সাঁওতালি মাধ্যম বিদ্যালয়গুলিতে এই ভাষায় পড়ানোর জন্য ২৮৪ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।’
নবান্ন সূত্রে খবর, স্কুল শিক্ষা দপ্তর সিদ্ধান্ত নেবে কীভাবে এই শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। নবান্ন থেকে দ্রুত এই শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নতুন যে উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি তৈরি করা হয়েছিল, সেখানে আপাতত তিন জন করে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। মন্ত্রীসভার অনুমোদন পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে স্কুল শিক্ষা দপ্তর এই শিক্ষক পদ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে। কীভাবে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে, তাও জানাবে।
রাজ্যে প্রচুর সাঁওতালি ভাষাভাষীর মানুষ রয়েছেন। এই ভাষাকে অনেক আগেই সরকারি ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সাঁওতালি মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার ঘটানোর জন্য সরকার ইতিমধ্যেই উদ্যোগী হয়েছে। এই ভাষার প্রসারের জন্য সাঁওতালি মাধ্যম স্কুলগুলিতে নতুন নতুন শিক্ষক পদ তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারই ফলস্বরূপ এই ভাষা পড়ানোর জন্য এদিন মন্ত্রীসভায় নতুন শিক্ষক পদ তৈরি করা হল।
রাজ্যের বেকারত্ব কমাতে সর্বদাই সক্রিয় থাকেন মমতা। সেই উদ্দেশ্যেই কিছুদিন আগেই নেতাজী ইনডোরে আয়োজন করেছিলেন জব ফেয়ার বা কর্মসংস্থান মেলার, সেখান থেকে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে আর ঠিক তার পরেই শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা৷ আর তার সঙ্গে শিল্প-সংস্কৃতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে সার্বিক উন্নয়নের অগ্রগতির হার দেখে নিঃসন্দেহে বলা যায় ‘এগিয়ে বাংলা’।