তাঁর জন্যেই নাকি শোভনের এমন অশোভন আচরণ! তাঁর কারণেই নাকি মন্ত্রীত্ব থেকে মেয়র পদ, সবকিছুই ত্যাগ করলেন শোভন! গত দেড় দিন প্রায় বেপাত্তাই ছিলেন তিনি। অবশেষে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুললেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রথমেই তিনি জানান তাঁর জীবনে শোভন দা ভগবানের মতো। কিন্তু তাঁদের দুজনকে জড়িয়ে রটানো মিথ্যা গুজবের জন্যই আজ শোভন দাকে এত বড় ত্যাগ স্বীকার করতে হল। এর পাশাপাশি বৈশাখী আরও জানান, ওঁর স্ত্রী যেভাবে তাঁর স্বামীকে সবার সামনে অপদস্থ করছেন, আমি তাঁর জায়গায় থাকলে কখনই তা করতাম না। আমি তো মনে করতাম আমার স্বামী একজন আইকন। তাই তাঁর সম্মান আমি এভাবে সকলের সামনে নষ্ট করতে পারতাম না।
শোভনের সঙ্গে সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই বৈশাখীর দিকে বারবার অভিযোগের আঙ্গুল তোলা হয়েছে। প্রায় সবাই মনে করেছেন তাঁর প্রভাবেই শোভনের এমন অবস্থা। আর কাল পদত্যাগের পর রাজনীতির জগত থেকে শোভনের পরিবার সকলেই সরাসরি তাঁর দিকে আঙ্গুল তুলছেন। তাঁর সাথে এই ঘনিস্থতাই নাকি শোভনের কাল হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মায়ের ফ্ল্যাটে বসে বৈশাখী বলেন, আমায় জড়িয়ে যে গুজব ছড়ানো হয়েছে, তাঁর শিকার হলেন শোভন দা। একটা বিরাট ভুল বোঝাবুঝি চলছে। তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীকে কেউ ভুল বুঝিয়েছেন, তাই রত্না দেবী আর উনি একই কথা বলছেন! পাশাপাশি তিনি বলেন, শোভন দাকে বলতাম তুমি নিজে গিয়ে মমতাদিকে সবটা জানাও। উনি বলতেন দিদি জানেন না এমন নয়। হয়তো অন্যদের কথা শুনছেন। যদিও এমন কথার কোনও ভিত্তিই নেই বলে তৃণমূল সুত্রে খবর। কারণ মুখ্যমন্ত্রী বহুবারই শোভনকে আলাদা ডেকে বুঝিয়েছেন। নিজে কথা বলেছেন তাঁর সঙ্গে। কিন্তু স্নেহের কাননই দিদির অবাধ্য হয়েছেন।
শোভনের ওপর ওঠা কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগকেও উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন আমি তো দেখিনি যেঁ ওর কাজে মন নেই! সেপ্তেম্বেরের ২২ তারিখ থেকে উনি স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় পর্যন্ত পায়নি। আমি বললে বলেছে পুরসভার অনেক কাজ আছে! এরপরেও কি করে বলতে পারি ওঁর কাজে মন নেই?
শোভনের হয়ে সাফাই গাইতে গিয়ে বৈশাখী এদিন যেভাবে মুখ্যমন্ত্রীর বিচক্ষণতার দিকেই আঙুল তুলে দিয়েছেন, এতে আরও চটেছে দল। যেখানে পুরসভার আধিকারিকরা থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত সকলেই বলেছেন পুরসভার কাজে গাফিলতি দেখা গেছে, সেখানে একজন বাইরের লোক হয়ে কীভাবে বৈশাখী দাবি করতে পারেন পুরসভার বা বাদবাকি কাজ ঠিক মতোই করেছেন শোভন? তাই শোভনের দোষ আড়াল করতেই যে আসরে নেমেছেন বৈশাখী। তা বুঝতে আর বাকি নেই কারও।