নোটবন্দীর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন কৃষকেরা। খোদ মোদী সরকারের কৃষি মন্ত্রকই কবুল করল একথা।
অর্থমন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সামনে কৃষি মন্ত্রকের স্বীকারোক্তি, নোটবন্দীর ফলে কোটি কোটি কৃষকের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছিল। শুধু তাই নয় নগদের অভাবে ১.৩৮ লক্ষ কুইন্টাল গম বীজ বিক্রি করতে পারেনি সরকারের বীজ নিগম। সরকার পুরনো পাঁচশো ও হাজার টাকার নোটে বীজ কেনার অনুমতি দেয়। বিক্রি বাড়েনি তাতেও।
নোটবন্দী নিয়ে আলোচনা করতে বসা সংসদীয় কমিটিকে পেশ করা রিপোর্টে কৃষি মন্ত্রক জানিয়েছে, ২০১৬ সালে যখন প্রধানমন্ত্রী মোদী নোটবন্দীর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করছিলেন, তখন দেশের কোটি কোটি কৃষক খরিফ ফসল বেচতে ব্যস্ত। বাকিরা রবি চাষের বীজ বোনা শুরু করেছেন। দুটি ক্ষেত্রেই নগদের প্রয়োজন। কারণ দেশের ২৬ কোটির বেশী কৃষক নগদে কেনাবেচা করেন। বড় চাষি বা জমি মালিকরাও সঙ্কটে পড়েছিলেন। খেতমজুরদের দৈনিক মজুরি এমনকি বীজ কিনতে গিয়েও সমস্যায় পড়তে হয়েছিল।
সবে ছত্তিসগড় বিধানসভা ভোট শেষ হয়েছে। এখনও ৪ রাজ্যে ভোট বাকি। প্রধানমন্ত্রী মোদী মধ্যপ্রদেশের নির্বাচনী প্রচারে নোটবন্দীর সুফল গেয়ে বেড়াচ্ছেন। সেই সময়েই কৃষি মন্ত্রকের এমন স্বীকারোক্তি চাপে ফেলে দিয়েছে মোদী সরকারকে। পাশাপাশি মোদী-বিজেপির অস্বস্তি বাড়াচ্ছে কৃষক বিক্ষোভও। ফসলের ক্ষতিপূরণ ও কৃষি ঋণ মকুবের দাবিতে মহারাষ্ট্রে বিক্ষোভ শুরু করেছেন ২০ হাজারেরও বেশী কৃষক। সব মিলিয়ে ঘুম উড়ে গেছে মোদী সরকারের।
এসবের মধ্যে কৃষকদের ক্ষোভ উসকে দিয়েছেন মনমোহন সিং। মধ্যপ্রদেশে ইন্দোরে তিনি বলেন, ‘মোদী সরকার দিনে একটা করে মিথ্যে গল্প ফাঁদলেও, বাস্তব হল, নোট বাতিল ছিল পর্বতপ্রমাণ ব্যর্থতা। এর কোনও লক্ষ্যই পূরণ হয়নি। এখন মধ্যপ্রদেশ-সহ গোটা দেশে কৃষকেরা আত্মহত্যা করছেন। কিন্তু ঋণ মকুবের সুরাহার কথা না-ভেবে তাদের একে-৪৭ দিয়ে গুলি করে মারা হচ্ছে’।