ধরা পড়লে কড়া শাস্তির হুঁশিয়ারি ছিল। কিন্তু সেসবকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে রমরমিয়ে চলছে মাদক সেবন। সম্প্রতি বেশ কয়েকজনকে হাতেনাতে পাকড়াও করেছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপাতত তাঁদের দিয়ে মুচলেকা লিখিয়ে নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। ছাত্ররা লিখেছে, ‘আর হবে না স্যার, এবারের মতো ছেড়ে দিন’। তবে প্রশ্ন হল, বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে বলছে মদ্যপান বা কোনও নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করার সময় ধরা পড়লেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, সেখানে স্রেফ মুচলেকা দিয়েই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে কেন?
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে মদ্যপান ও মাদক সেবনের চল নতুন নয়। বিশ্ববিদ্যালয় তাতে রাশ টানতে নির্দেশিকা জারি করেছিল। পড়ুয়াদের তা জানিয়েও দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরেও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের নেশায় আসক্তি কমেনি বলেই অভিযোগ। আশপাশের বাসিন্দাদের অভিযোগ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এখন মদ্যপদের চারণভূমিতে পরিণত হয়েছে।
অভিযোগ, যে গ্রিন জোনে বসে নেশার দ্রব্য সেবন করা হয় তা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন এবং চার নম্বর গেটের মধ্যবর্তী অংশ। বলতে গেলে তিন নম্বর গেটের কাছেই সেই এলাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের রক্ষীদের একাংশের অভিযোগ, বহিরাগতদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও প্রতি রাতেই কেউ না কেউ আসছে। কখনও কখনও দল বেঁধেও আসছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই সব ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে যাদবপুরের পড়ুয়ারাও থাকেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিকের কথায়, প্রতিদিন রাতে রক্ষীরা তল্লাশি চালান। রাতে কারা রয়েছেন, কী করছেন, তার উপর নজরদারি চালান তাঁরা। এই নজরদারি চালাতে গিয়েই মদ্যপান করা অবস্থায় অনেক ছেলে-মেয়ে ধরা পড়েছে। সেই দলে বাইরের ছাত্রছাত্রীও ছিলেন। কিছু ক্ষেত্রে মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেই সব পড়ুয়াদের ধরে পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখানোয় কেউ কেউ মুচলেকা দিয়ে চলে গিয়েছেন। কেউ কেউ আবার কাকুতি মিনতি করে ছেড়ে দেওয়ার আর্জিও জানিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য এ বিষয়ে বলেন, প্রবেশাধিকারের উপর নিয়ন্ত্রণ জারির পর রাতে বহিরাগতদের আনাগোনা অনেকটাই কমেছে।