আর মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা। তারপরেই দীপ জ্বলে উঠবে বাংলার ঘরে ঘরে। শক্তির আরাধনায় মেতে উঠবে বাঙালি৷ তাই ‘আদ্যাশক্তি মহামায়া’-র আরাধনার প্রস্তুতি, ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে দিক দিকে৷
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কল্যাণে রাজ্যে যে কোনও পুজো ও উৎসবের আনন্দ এখন দ্বিগুণ। তাই পঞ্জিকা মতে আগামী ৬ নভেম্বর কালী পুজো হলেও, তার দিন দুয়েক আগেই বড় বড় পুজোগুলির মন্ডপে চলে আসবে প্রতিমা। শুরু হয়ে যাবে ঠাকুর দেখার হিড়িক৷
শহরের বড় বড় পুজো কমিটিগুলির লক্ষ্যই থাকে মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে তাদের পুজোর উদ্বোধন করানোর৷ ব্যতিক্রম নয় গিরীশপার্ক ফাইভ স্টার স্পোটিং ক্লাবও৷ এবছর শক্তির আরাধনায় ৬৯তম বর্ষে পা দিল এই পুজো৷ আগামীকাল, শুক্রবার স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী শুভ উদ্বোধন করবেন এই পুজোর৷ ফলে মন্ডপে এখন শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে জোরকদমে।
vশিল্পী প্রশান্ত পালের ভাবনায় গিরীশপার্ক ৫ স্টার স্পোটিং ক্লাবের এবছরের থিম ‘অন্তর্যামী, ভক্তিতেই মুক্তি’৷ আসলে অধিকাংশ মানুষই জীবনের শেষ প্রান্তে এসে ভক্তিকে আশ্রয় করেই নিজের মুক্তির পথ খোঁজে৷ সেই বার্তায় থাকছে গোটা মন্ডপ জুড়ে।
ক্লাবের অন্যতম সদস্য তথা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি সৌম্য বক্সির ‘এখন খবর’কে বলেন, ‘আমাদের এবারের থিম অন্তর্যামী, ভক্তিতেই মুক্তি। আসলে আমরা বিপদে পড়লেই ভগবানকে ডাকি। তিনি রক্ষা করেন। আসলে মুক্তির পথ খুঁজে পাওয়া যায় ভক্তিতেই। এই থিমকেই ফুটিয়ে তোলার জন্য আমরা কাল্পনিক শক্তিপীঠ গড়ে তোলার চেষ্টা করছি৷ এই শক্তিপীঠে এসে ভক্তি জাগরিত হবে প্রতিটি দর্শনার্থীর মনে৷’
তিনি আরও বলেন যে, ‘গোটা মণ্ডপে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে দশমহাবিদ্যা-সহ কালীর আরও বিভিন্ন রূপ৷ মন্ডপে থাকছে ৫০-৬০ রকমের কালী। প্রদীপ যেহেতু মাঙ্গলিক, তাই মণ্ডপ সাজাতে ব্যবহার করা হচ্ছে হাজার খানেক প্রদীপ৷ এছাড়াও ব্যবহার করা হচ্ছে হরেকরকম রঙ, ঘট, শাঁখা-পলা। মূলত শক্তি আরাধনার কাজে ব্যবহৃত সামগ্রী দিয়েই সাজিয়ে তোলা হচ্ছে মণ্ডপ৷’
তবে এখানেই শেষ নয়। মন্ডপের পাশাপাশি পুজোয় আলোতেও থাকছে চমক৷ ধনেখালি ও কাঁকিনাড়া থেকে আনা রঙিন আলোতে মুড়ে ফেলা হচ্ছে গোটা সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ চত্ত্বর৷ সেই আলোর মধ্যেই ফুটিয়ে তোলা হবে মুখ্যমন্ত্রীর সাধের কন্যাশ্রী, যুবশ্রী প্রকল্পকে৷
এছাড়া, আগামী ৮ নভেম্বর পুজো কমিটির তরফে ‘অন্নকূট’ উৎসবেরও আয়োজন করা হবে৷ প্রতিবারের মত এবারও প্রায় ৪ হাজার লোকের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে এই উৎসবে৷ সৌম্য জানান, ‘শুধু পল্লিবাসী নয়, অন্যান্য এলাকার বহু মানুষকে এই উৎসবে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়৷ প্রায় ৪ হাজার মানুষকে বসিয়ে খাওয়ানো হয়। এর পাশাপাশি আমরা এবার পথশিশুদেরও বসিয়ে খাওয়াব। এমন সামাজিক কর্মকান্ড আমরা সারাবছরই করে থাকি।’
সৌম্যর কথায়, আগামী কাল মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর হাতে উদ্বোধন হওয়ার পর সপ্তাহব্যাপী নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দিয়ে আমরা পুজো উদযাপন করব। আগামী ৪ তারিখ অনুষ্ঠান মঞ্চ মাতাতে আসছেন নচিকেতা। পাশাপাশি সপ্তাহের প্রতিটা দিনই আসছেন কোনও না কোনও শিল্পী।