রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবারই এই অভিযোগ তুলেছেন যে শিক্ষা ক্ষেত্রকে কার্যত রাজনীতির ময়দান বানিয়ে ফেলেছে কেন্দ্র। আবারও শিক্ষা ক্ষেত্রে ‘গেরুয়া’ ফতোয়া জারি করে, সেই অভিযোগকেই সত্য বলে প্রমাণ করল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের জন্মদিনটিকে ‘রাষ্ট্রীয় একতা দিবস’ হিসেবে পালন করার জন্য সকল বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নির্দেশ দিয়েছে ইউজিসি।
রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে অন্ধকারে রেখে সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যদের চিঠি দিয়ে আগামী ৩১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় একতা দিবস পালন করতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
ইউজিসির তরফে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সকল বিশ্ববিদ্যালয়কেই আগামী ৩১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় একতা দিবস পালন করতে হবে। এবং হাস্যকর ভাবে এর স্বপক্ষে তারা যুক্তি দেখিয়েছে যে, রাষ্ট্রীয় একতা দিবস পালন করলেই দেশের মধ্যে একতা বৃদ্ধি পাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে যে, একতা দিবসের দিন সকল শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের শপথবাক্য পাঠ করতে হবে। এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের ‘রান ও ইউনিটি’-র অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে হবে। ক্যুইজ, বিতর্কসভা-সহ একাধিক প্রতিযোগিতার বিষয়বস্তু হবে দেশাত্মবোধক, তাও নির্ধারণ করে দিয়েছে ইউজিসি।
লোকসভা ভোট যতই এগিয়ে আসছে, ততই ছাত্রযুব সমাজ-সহ সমগ্র দেশবাসীর মনে হিন্দুত্ববাদ ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বিজেপি, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও শিক্ষা নিয়ে বহুবার ‘দাদাগিরি’ করতে দেখা গেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে।
শিক্ষাক্ষেত্রে বিজেপির এমন ফ্যাসিবাদি আগ্রাসন দেখে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কেন্দ্রের ‘গেরুয়া’ ফতোয়ায় একপ্রকার কালিমালিপ্তই হচ্ছে শিক্ষা।