ছত্তিশগড়ে বিধানসভা নির্বাচন। তাই রাজ্যের জঙ্গলমহল থেকে পাঁচ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী তুলে নিতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু কেন্দ্রের এই মনোভাবে ঘোর আপত্তি রাজ্যের। সেকথা জানিয়েও দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। এখন জঙ্গলমহলে ৩৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আছে। গত ১২ অক্টোবর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক নবান্নকে জানায়, এই মুহূর্তে জঙ্গলমহল শান্ত। মাওবাদী আনাগোনার কোনও খবর নেই। তাই ৩৬ কোম্পানি থেকে ৫ কোম্পানি সরিয়ে নইলে রাজ্যের অসুবিধা হবে না।
প্রসঙ্গত, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও জঙ্গলমহলের ৪ টি জেলা – বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে প্রায় ৫৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল। নির্বাচন-সহ বিভিন্ন কারণে ধাপে ধাপে কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই ১৮ কোম্পানি বাহিনী তুলে নিয়েছে। পরে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও দেয়নি। এখন মাত্র ৩৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে। রাজ্যে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং আশ্বাস দিয়েছিলেন এই বাহিনী আর তোলা হবে না। কিন্তু ৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে রাজ্যকে চিঠি পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
এই চিঠি আসার পরেই রাজ্যের নিরাপত্তা উপাদেষ্টা সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ পুলিশের শীর্ষকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে জঙ্গলমহলের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। তারপরেই রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীও ছাড়া সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, জঙ্গলমহল শান্ত থাকলেও, এলাকার সীমান্তবর্তী রাজ্য ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড় ও ওড়িষ্যা এই তিন রাজ্যেই মাওবাদীরা অতি সক্রিয়। বাহিনী তুলে নিলে যে কোনও মুহূর্তে এই রাজ্যেও মাওবাদী আনাগোনা শুরু হয়ে যাবে। নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে তাতে। তাছাড়া পুলিশের তাড়া খেয়ে ঝাড়খণ্ড থেকে দুষ্কৃতীরা প্রায়ই বাংলায় ঢুকে গোলমাল পাকায়। তাদের আটকাতেও কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যের প্রয়োজন। তাই নিরাপত্তার স্বার্থেই রাজ্যের পাঁচ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো সম্ভব নয়।