অ্যাপ নয়, যেন আলাদীনের প্রদীপ! এক ক্লিকেই প্রদীপের জিনের মত হরেক কাজ নিমেষে করে দেবে বিশেষ সেন্সর। এবার বাড়ির পাখা, আলো থেকে শুরু করে সরকারি নিরাপত্তার নজরদারিতে থাকা ব্রিজ, রেলের ট্র্যাক, সিগন্যাল, সমস্ত কিছুই মোবাইল এই অ্যাপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে একইসঙ্গে ব্যবহার করতে হবে সেন্সরটি। যে সেন্সর জিনের মতই আপনার হুকুম তামিল করবে।
তবে এতে খরচ পড়বে সামান্যই। এক বাঙালি গবেষক এমনই এক প্রোটোটাইপ বা পরীক্ষামূলক যন্ত্র তৈরি করেছেন, যাতে খরচ হয়েছে মাত্র হাজার ছয়েক টাকা। বিশ্বে এত কম খরচে এমন যন্ত্র আর কেউ তৈরি করতে পারেনি বলেই দাবি করেছেন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক, বারাসতের বাসিন্দা দীপশুভ্র গুহরায়।
তিনি জানিয়েছেন, ‘ইন্টারনেট অফ থিংস বা আইওটি গবেষণার অঙ্ক বা অ্যালগোরিদমে পরিবর্তন এনেছি আমি। কাজে সাহায্য করেছেন অপর গবেষক বিপাশা মাহাতো ও গবেষণার সুপারভাইজার অধ্যাপক দেবাশিস দে। এছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ মেলবোর্নের অধ্যাপক রাজকুমার বুইয়া।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুরনো সমস্ত গবেষণাতেই মূলত দুটো সমস্যা তৈরি হচ্ছে, প্রযুক্তির ভাষায় যাকে বলা হচ্ছে ডিলে এবং মেসেজ লস। সোজা কথায় বললে, আপনি হয়তো অ্যাপের মাধ্যমে কোনও নির্দেশ পাঠালেন, ১০ বার সেটি কাজ করল, পাঁচ বার করল না। কিন্তু আমি প্রমাণ করেছি, আমার হাতে তৈরি যন্ত্র ও অ্যালগরিদম একসঙ্গে ব্যবহার করলে সমস্যা সবচেয়ে কম হবে। এই কারণেই এই বিষয়ে গবেষণামূলক লেখা প্রকাশিত হয়েছে এলসাইভার পত্রিকায়।’
কলকাতায় বসেও যে এই ধরনের কাজ করা যায়, এই গবেষণা সেটাই প্রমাণ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৈকত মৈত্র ও ইনফরমেশন বিজ্ঞানী মহম্মদ আফতাবুদ্দিনকে এই গবেষণায় উৎসাহ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন দীপশুভ্র। ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাবা-মাকেও।
জানা গেছে, আগামী দু’বছরের মধ্যে এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে প্রায় ৩০০ কোটি ডিভাইস বা যন্ত্রে। বিনিয়োগ করা হবে প্রায় ৭ হাজার কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি। কারণ, এই প্রযুক্তি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সদ্য জনপ্রিয় হওয়া ‘স্মার্ট হোম’ তৈরিতে ব্যবহার করা হবে। বড় সংগ্রহশালা, সংশোধনাগার, প্রশাসনিক ভবন, রেলওয়ে ব্যবস্থা, পরিবহণ ব্যবস্থা, স্মার্ট গাড়ি, এ সমস্ত কিছুতে দরকার পড়বে ইন্টারনেট অফ থিংসের। শুধু বিলাসের জন্যই নয়, নিরাপত্তার কাজেও এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো যাবে।