এখন আর শুধু শহরের মুখ নয়, গোটা শরীরই ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে। বিভিন্ন পণ্য উৎপাদক সংস্থা পুজোর সময় ব্যাপক জনসমাগমকে ‘টার্গেট ক্রেতা’ হিসাবে পায়। ফলে প্রচারের এমন সুযোগ ষোলো আনার ওপর আঠারো আনা উশুল করে নিতে চান তাঁরা। উৎসবের বাণিজ্যিক দিকটার কথা ভেবে কেউ তেমন আপত্তিও তোলে না। ফলে পুজোর কদিন শহরের প্রায় সব রাস্তার ধারে বাঁশের অস্থায়ী কাঠামো বেঁধে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং টাঙানোর ব্যবস্থা করা হয়। কোথাও কোথাও সেই হোর্ডিং থেকে যায় বিজয়ার পরেও। আগে শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড় এবং বাসস্ট্যাণ্ড বাদ রেখে লাগানো হত এমন হোর্ডিং। এখন ছাড় দেওয়ার কোনও বালাই নেই। শহরের রাস্তার সঙ্গে দৈনন্দিন পরিচিতি নেই এমন মানুষজন বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া দোকান বা বিল্ডিং লক্ষ্য করে বাস থেকে নামেন।
বহু বিখ্যাত দোকানের নামেও শহরে বাসস্ট্যাণ্ড রয়েছে। কিন্তু এইসব অস্থায়ী হোর্ডিংয়ের দৌলতে এখন আর রাস্তার আশপাশের কোনও কিছুই দেখা যাচ্ছে না। এমনকি দ্বিমুখী রাস্তার মাঝের ডিভাইডারও বাদ যায়নি। ফলে দুর্ঘটনা বা আপদকালীন পরিস্থিতিতে কেউ রাস্তা টপকাতে চাইলেও পারবেন না।
বিজ্ঞাপনের দৌলতে পুজোর সময়ে প্রশস্ত রাজপথকেও সঙ্কীর্ণ গলি মনে হয়। শুধু কলকাতা নয়, শহরতলির চিত্রটাও একইরকম। যদিও বিজ্ঞাপনের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরকর্তা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, মানুষের এই স্বতঃস্ফুর্ত উৎসবে হোর্ডিংয়ের মতো সামান্য বিষয়ের ওপর কোনও নিয়ন্ত্রণ রাখা হয়নি।