জাতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী জোটে কোনও ফাঁক রাখতে চান না তৃণমূলসুপ্রিমো। তাই ১৯শে জানুয়ারি পূর্ব ঘোষিত বিরোধীদের ব্রিগেড সমাবেশে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি সিপিএম-কেও আহ্বান জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানো হবে সিপিএমকে৷ নিমন্ত্রণ যাবে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের কাছেও।’
মমতার এই আহ্বানে বাংলার আলিমুদ্দিনের কর্তারা বেজায় অস্বস্তিতে। আবার দিল্লীর গোপালন ভবনের নেতারা বরাবরের মতো এবারও ঠিক করে উঠতে পারছেন না কোন দিকে যাওয়া উচিৎ। জাতীয়স্তরে বিজেপি বিরোধী জোটে তৃণমূলই প্রধান চালিকা শক্তি৷ আবার বাংলায় সিপিএমের মূল প্রতিপক্ষ জোড়া ফুল শিবির৷ তাই জাতীয় মঞ্চে মোদী বিরোধিতায় মমতার সঙ্গে যাওয়া উচিত কিনা তা নিয়ে প্রবল সংশয়ে কারাত-সুজনরা। তারা কৌশল তৈরিতেই ব্যস্ত৷ তাই বাংলার সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী মমতার এই ঘোষণাকে ‘নাটক’ মনে করেন। তাঁর কথায়, ‘এসব ড্রামা। মানুষ বোঝে।’
তৃণমূলের শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকেই ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেডে মোদী-বিরোধী জোটের সভা ঘোষণা করেছিলেন মমতা। এই সভায় উপস্থিত থাকার জন্য সোনিয়া-রাহুল, মায়াবতী-অখিলেশ, চন্দ্রবাবু-স্ট্যালিনের পাশাপাশি কেরলের সিপিএম মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। সেই প্রসঙ্গে তপসিয়ায় দলীয় ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে ব্রিগেডের প্রস্তুতির ব্যাপারে জানান তৃণমূলনেত্রী। বলেন, ‘কেরলের মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছি। ফরওয়ার্ড ব্লক, সিপিআই, আরএসপি-র মতো বাকি বাম দলগুলোকেও ব্রিগেডে ডাকবো। এখানকার সিপিএম এখন ঠিক করুক ওরা বিজেপির সঙ্গে থাকবে, নাকি বিজেপির বিরুদ্ধে’।
মমতার এই ঘোষণাকে তৃণমূলনেত্রীর কৌশলী পদক্ষেপ হিসাবে দেখছে রাজনৈতিক মহল। প্রথমত, সিপিএমকে আহ্ববান জানিয়ে জাতীয় জোট শক্তিশালী করার চেষ্টা করলেন মমতা৷ দ্বিতীয়ত, সেই আহ্ববানে সাড়া না দিলে তৃণমূলের ঘাড়ে জোট ভাঙার দোষ বর্তাবে না৷ উল্টে গুরুত্ব হারাবে সিপিএমই৷ আখেড়ে রাজ্য রাজনীতিতে তাতে লাভ জোড়া ফুলেরই৷
জানা গেছে, ব্রিগেডের সভার প্রস্তুতি হিসাবে নভেম্বরে পঞ্চায়েতের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মিটিং করবেন নেত্রী। তারপরই জেলায় জেলায় ব্রিগেডের প্রস্তুতির জন্য সভা, সমাবেশ, মিছিল,মিটিং শুরু হয়ে যাবে।