বলিউডে এই মুহুর্তে যে ক’জন অভিনেত্রী দাপটের সঙ্গে অভিনয় করছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম দীপিকা পাডুকোন। বলিউডে একের পর এক বলিষ্ঠ চরিত্রে অভিনয় করে ইতিমধ্যেই নিজেকে প্রমাণ করে ফেলেছেন দীপিকা। এমনকি ট্রিপেল এক্স – রিটার্ন অফ জ্যান্ডার কেজ-এর মত হলিউডি ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি। এবার আরও বড়সড় চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত দীপিকা।
‘তলোয়ার’ ও ‘রাজি’-র মত ছবির পরিচালক মেঘনা গুলজার এবার এক অ্যাসিড আক্রান্তের জীবনী নিয়ে সিনেমা বানাতে চলেছেন। সেই ছবিতেই অ্যাসিড আক্রান্ত লক্ষ্মী আগরওয়ালের ভূমিকায় দেখা যাবে দীপিকাকে। তবে, মূল চরিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি, এই সিনেমার মাধ্যমে প্রযোজক হিসেবেও অভিষেক হবে তাঁর।
ভারতের রাজধানী দিল্লির বাসিন্দা লক্ষ্মী আগরওয়াল। ২৮ বছর বয়সী লক্ষ্মীকে, ২০০৫ সালে এক যুবক প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সেই প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছিলেন তিনি।তাই প্রতিশোধ নিতে ওই যুবক লক্ষ্মীর মুখ-সহ গোটা শরীর লক্ষ্য করে অ্যাসিড ছোঁড়ে৷ ফলে, দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন তিনি৷ এরপর অস্ত্রোপচার করে সুস্থ হন৷ কিন্তু ভয়ে দমে যাননি লক্ষ্মী। বরং সুবিচার পাওয়ার আশায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি৷ অ্যাসিড কেনার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত৷
একটি এনজিও-র হয়ে অ্যাসিড আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করতেন লক্ষ্মী৷ বিয়েও করেন পরে৷ একটি সন্তানও রয়েছে তাঁর৷ কিন্তু সাংসারিক জীবনেও সেভাবে সুখী হননি তিনি৷ সেই বিয়েও টেকেনি শেষ পর্যন্ত। এখন সন্তান ও মাকে নিয়ে মুম্বইতে একটি ছোট্ট ফ্ল্যাটে দিন কাটান লড়াকু এই নারী৷ চাকরিও চলে গিয়েছে তাঁর৷
অবশেষে আর্থিক অনটনের দুঃসময়ে তার পাশে এসে দাঁড়ান বলিউড অভিনেতা অক্ষয় কুমার৷ ৫ লক্ষ টাকা সাহায্যও করেছিলেন অক্ষয়৷ এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় লক্ষ্মীর আর্থিক অনটনের খবর ছড়িয়ে পড়তেই, নেটিজেনদের একাংশও লক্ষ্মীর পাশে এসে দাঁড়ান৷ আপাতত আর্থিক পরিস্থিতির খানিকটা উন্নতি হয়েছে লক্ষ্মীর৷ তবে এখনও তাঁর লড়াই চলছে।
লক্ষ্মীর জীবন সংগ্রামের এই মর্মস্পর্শী কাহিনীকেই সেলুলয়েডের পর্দায় তুলে ধরতে চান মেঘনা গুলজার। ‘রাজি’-র পর আবারও এক ‘ওয়ান্ডার ওম্যান’-কে দর্শকদের সামনে হাজির করতে চান তিনি। তাই লক্ষ্মীর চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি বেছে নিয়েছেন দীপিকাকে৷
মেঘনা জানান, অ্যাসিড আক্রান্তদের লড়াইকে শ্রদ্ধা জানানো এবং তাঁদের এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য লক্ষ্মীকে নিয়ে সিনেমা করার প্রয়োজন ছিল৷ তাই এই সিনেমা তৈরির সিদ্ধান্ত৷ দীপিকা বলেন, ‘লক্ষ্মীর সংগ্রামের কাহিনী আমাকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে৷ একজন অ্যাসিড আক্রান্ত মহিলা যে জীবনে এতটা লড়াই করতে পারেন, তা বিশ্বাস করতেও অবাক লাগে৷ শুধু মূল চরিত্রে অভিনয়ই নয়, সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই সিনেমা প্রযোজনার দায়িত্বেও থাকব আমি৷’ জানা গেছে, ২০১৯ সালে দীপিকার প্রযোজনায় মুক্তি পাবে এই ছবি। যা নিয়ে এখন থেকেই আগ্রহ তৈরি হয়েছে দর্শকদের মনে।