বামের দোসর রাম। চলতি মাসেই বনধ ডেকে মুখ পুড়েছিল বামেদের। এবার বাম শিবির সঙ্গে পাল্লা দিয়েই আগামী বুধবার ১২ ঘণ্টার বনধ ডাকল বিজেপি। এতদিন বনধ কালচারের বিরােধী হিসেবেই প্রচার চালিয়ে এসেছেন গেরুয়া নেতারা। কিন্তু রাজ্য সরকারকে বিপাকে ফেলতে শেষপর্যন্ত বনধের মতাে ভোঁতা অস্ত্রকে হাতে তুলে নিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। মুরলী ধর সেন লেনের কর্তারাও ভালাে জানেন তাদের ডাকা বনধ সর্বাত্মকভাবে মুখ থুবড়ে পড়বে। কিন্তু বামেদের বনধের অস্ত্রকে বিজেপি তাদের হাতিয়ার করার চেষ্টা যে মাঠে মারা যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে বনধের ডাক দেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ইসলামপুরে ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলি চালানাের ঘটনার প্রতিবাদে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যে ৬ টা পর্যন্ত বাংলা বনধ করবে বিজেপি। রাজ্যের আইনশৃঙখলার অবস্থার অবনতির অভিযােগ তুলে ২৬ তারিখ নবান্ন ঘেরাও এর ডাক দিয়েছিল গেরুয়া নেতৃত্ব। তার পরিবর্তে বাংলা বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘােষ বলেন, গােটা রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তাই এর প্রতিবাদে ও পুলিশি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বনধের ডাক দিয়েছি। যদিও বিজেপির ডাকা বনধকে আমল দিতে নারাজ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, অকারণে ঘন ঘন বনধ ডাকা হচ্ছে। আজকেও হাস্যকর বনধ ডাকা হয়েছে। বনধ ডেকে নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে ওরা। রাজ্যে অশান্তি এবং বিশৃঙখলা পাকিয়ে রাজ্য দখলের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। বনধ সর্বাত্মকভাবে ব্যর্থ হবে। বিজেপির একাংশের মধ্যেই বনধ ডাকা নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে। দলের একাংশের মতে, দল যখন সমসময় বনধ বিরােধী তখন বনধ ডাকার সিদ্ধান্ত আখেরে বিজেপির অবস্থান নিয়েই বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিল। কারণ বাংলার মানুষ সিপিএমের বনধ কালচারকে একেবারে ‘বন্ধ করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির বনধ মানুষের মধ্যে কতটা প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এমনকী সবসময়ই রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘােষের মুখে শােনা যায়, তাদের দল কোনও বনধকেই সমর্থন করে না। তারপরেও এই বনধ ডাকার ফলে বিজেপির নীতি নৈতিকতা নিয়ে আঙুল তুলবে সাধারণ মানুষই। যদিও প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘আমরা বনধ সমথর্ন করি না। কিন্তু যেখানে পরিস্থিতি গেছে সেখানে বনধ ডাকা ছাড়া কোনও উপায় নেই। এদিকে, বিজেপির ডাকা বনধকে সমথর্ন করবে না বলেই জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সােমেন মিত্র।