রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরই মহানগরীর গঙ্গাপার ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে কাজে সফলও তিনি। এবার সেই গঙ্গায় এপার-ওপার করবে বৈদ্যুতিন ফেরি। আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ব্যাটারিচালিত এই লঞ্চগুলির পারাপার খুব শিগগিরই চালু হয়ে যাবে কলকাতায়। এছাড়াও জার্মান প্রযুক্তিতে ২০টি বৈদ্যুতিন ট্রলি বাস নামছে কলকাতার রাস্তায়। এই ইলেকট্রিক্যাল বাস প্রকল্প এবং গঙ্গায় নতুন ফেরি সার্ভিস চালু করতে প্রাথমিক স্তরে আলোচনাও হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর এবারের জার্মান সফরে। ডুসেলডর্ফে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের সঙ্গে জার্মানির শীর্ষ অর্থ ও প্রযুক্তি পরিষেবা সংস্থা ‘জিআইজেড’-এর প্রতিনিধিদের বুধবার দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে এই দুই প্রকল্প ছাড়াও বর্জ্য নিষ্কাশন নিয়েও শিল্প প্রকল্প গড়ে তোলার কথা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী এদিন বলেন, গঙ্গায় যেভাবে লঞ্চ পারাপার করে, তাতে দূষণ ছড়ায়। ডিজেলে চলে বলে দূষণের মাত্রা বেশি থাকে। আমরা এখানে দেখলাম, নদীপথে বৈদ্যুতিন ফেরি চলছে। কলকাতায় এবার জার্মানির প্রযুক্তি নিয়ে ফেরি সার্ভিস চালু করব।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবারের বিদেশ সফরে শিল্প বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। শুধু লগ্নিতেই থেমে থাকছেন না মমতা। জার্মানির আধুনিক প্রযুক্তি ও পরিষেবাও নিয়ে যেতে চান বাংলায়। তাঁর নির্দেশে জার্মানি যাওয়ার পর থেকেই বেশ কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে অর্থ সচিব হরিকৃষ্ণ ত্রিবেদী ও পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমের এমডি বন্দনা যাদবও। জুমেইরা হোটেলে গত মঙ্গলবার মমতার ভাষণে অভিভূত জার্মানির শিল্পোদ্যোগীরা। তাঁর ভাষণ এতটাই সাড়া ফেলেছে যে, জার্মানির বাণিজ্য প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই রাজ্যের প্রস্তাবিত প্রকল্প নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেছেন। অমিত মিত্র জানিয়েছেন, ইলেকট্রিক ট্রলি বাস, ফেরি ও ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পে বিনিয়োগ হবে। সেইসঙ্গে প্রযুক্তি দিয়ে সাহায্য করবে জার্মান সংস্থাগুলি। অর্থমন্ত্রী বৈঠকে জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ ই-গভর্ন্যান্সে ভারত সরকারের কাছ থেকে বহু পুরস্কার পেয়েছে। ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট নিয়ে রাজ্যের উদ্যোগ যথেষ্টই প্রশংসার যোগ্য বলে মনে করছেন এখানকার শিল্পোদ্যোগীরা। নগরায়নের জীবনযাত্রায় গতি বেড়েছে কলকাতাতেও। দূষণহীন প্রযুক্তিতে তাই এই বৈদ্যুতিন ফেরি বা ট্রলি বাস খুবই কার্যকর পদক্ষেপ হবে। এমনই মনে করছেন সকলে। এখন থেকেই রাজ্যবাসী যে এই বৈদ্যুতিন ফেরি বা ট্রলি বাসে চড়ার অপেক্ষায়, তা বলাই বাহুল্য।