ঢাকে কাঠি পড়তে এখনও একমাস বাকি। অক্টোবরের মাঝামাঝি দুর্গাপুজো। অথচ, তার মাসখানেক আগে থেকেই শহরের ফুটপাতে তৈরি হয়ে গিয়েছে বিজ্ঞাপন টাঙানোর জন্য বাঁশের কাঠামো। এসপি মুখার্জি রোড হোক বা কলেজ স্ট্রিট, শরৎ বোস রোড বা সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ। উত্তর-দক্ষিণের ছবি অবিকল এক। কোথাও আগষ্টের মাঝামাঝি থেকেই দাঁড়িয়ে গিয়েছে বাঁশের কাঠামো।
কয়েক বছর আগেও যেখানে দূর্গাপুজোর আট-দশ দিন আগে থেকে বাঁশের কাঠামো তৈরি করা হত, সেখানে এখন কেন এই অবস্থা ? ‘স্রেফ বিজ্ঞাপন টানার প্রতিযোগিতা’, উত্তর চেতলা অগ্রণী পুজোর আহ্বায়ক সমীর ঘোষের। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘পুজোর খরচ এখন অনেকটাই স্পনসরদের থেকেই আসে। তাদের বিজ্ঞাপনের জন্যই বাঁশের কাঠামো। সব পুজো বেশি জায়গায় পেতে চায়। এই প্রতিযোগিতার কারণে আগে থেকে বাঁশ পুঁতে জায়গায় চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। ভোটের সময় যে ভাবে দেওয়াল দখল হয়, এখানে সে ভাবেই ফুটপাতের গায়ে জায়গা দখল।’ আর জায়গা দখলের এই প্রতিযোগিতায় শহর ক্রমেই বাঁশের খাঁচায় পরিণত হচ্ছে।
কলকাতা পুরসভার অনুমতি ছাড়াই অনেক জায়গায় এ ভাবে ঢালাও বাঁশের কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান ও বিজ্ঞাপন) দেবাশিস কুমারের বক্তব্য, ‘এই বিজ্ঞাপনগুলিকে আমরা সম্পুর্ণ করমুক্ত করে দিয়েছি অনেক দিন। নিয়ম অনুসারে পুরসভা থেকে অনুমতি গ্রহণ করা উচিত। রোডস ডিপার্টমেন্ট এই বিষয়টি দেখে। তবে সব জায়গায় অনুমতি নেওয়া হয় বলে মনে হয় না।’ মেয়র পারিষদ (রোডস) রতন দে বলেন, ‘রোডস ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে এই বাঁশ পোঁতার অনুমতি প্রদানের কোনও সম্পর্ক নেই। এর জন্য অনুমতি বিজ্ঞাপন বিভাগ থেকে গ্রহণ করতে হয়।’
নিয়ম বলবৎ করার দায় কার, এ নিয়ে মতান্তর থাকলেও দুই মেয়র পারিষদ মেনে নিচ্ছেন, অনেক জায়গায় সেই অনুমতি ছাড়াই বাঁশের কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। তা হলে পুরসভা ব্যাবস্থা নিচ্ছে না কেন ? দেবাশিস বাবুর যুক্তি, ‘দুর্গাপুজোর সঙ্গে মানুষের আবেগ জড়িয়ে আছে। এই পুজো বাংলার সবচেয়ে বড় ফেস্টিভ্যালে পরিণত হয়েছে। মানুষের আবেগকেও আমাদের মর্যাদা দিতে হয়।’