বিজয় মালিয়া-কাণ্ডে শুধু অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিতে থেমে থাকছে না কংগ্রেসের আক্রমণ। এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। একটি টুইটে তিনি লেখেন, ‘মালিয়ার মহানিষ্ক্রমণে ছিল সিবিআই-য়ের মদত। তাই আটক করার নোটিশকে নিঃশব্দে বদলে ফেলা হল খবর দেওয়ার নোটিশে। সিবিআই প্রধানমন্ত্রীর অধীনে কাজ করে। তাঁর সম্মতি ছাড়া একটি হাই প্রোফাইল এবং বিতর্কিত মামলার নোটিশ বদলে যাবে, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়’।
লুক আউটনোটিশ বা নজর রাখার নোটিশ দুধরণের হয়। একটি ‘ডিটেনশন নোটিশ’। অর্থাৎ তদন্তের আওতায় থাকা অভিযুক্ত ব্যক্তি দেশ ছাড়ার চেষ্টা করলে তাঁকে আটক করা। দ্বিতীয়টি ‘ইনফর্ম নোটিশ’। অর্থাৎ অভিযুক্ত বিদেশ থেকে দেশের কোনও বিমানবন্দরে নামলে সঙ্গে সঙ্গে যেন খবর দেওয়া হয়।
২০১৫-র অক্টোবরে বিজয় মালিয়ার বিরুদ্ধে ডিটেনশন নোটিশই জারি করা হয়েছিল। কিন্তু একমাস পর সেই নোটিশ বদলে জারি হয় ‘ইনফর্ম নোটিশ। এরপরেই প্রশ্ন ওঠে কেন? সিবিআই-এর সাফাই, মালিয়ার বিরুদ্ধে তেমন সাক্ষ্য-প্রমাণ হাতে ছিল না বলেই নোটিশ বদলাতে হয়। মালিয়া পালিয়ে যেতে পারেন, এমন কোনও আশঙ্কাও তাঁদের ছিল না।
মুম্বই বিমানবন্দর থেকে বিপুল লটবহর নিয়ে ২০১৬-র ৩ মার্চ দেশ ছেড়ে পালিয়াছিলেন। একটি সংবাদ চ্যানেলের খব্রে প্রকাশ, ব্যঙ্ক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে ওইদিনই মুম্বই বিমানবন্দরে নেমেছিলেন সিবিআই-এর তৎকালীন ডিরেক্টর অনিল সিনহা। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশও উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই মালিয়ার দেশ ছাড়ার খবর আসে। তখনই ব্যঙ্ক কর্তাদের ক্ষোভের মুখে পড়েন সিবিআই প্রধান। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, অর্থনৈতিক অপরাধে এফআইআর রয়েছে লোকটার নামে, ব্যঙ্কগুলির কাছে ৯ হাজার কোটি টাকার বকেয়া ঋণ, কেন তাঁকে এভাবে চলে যেতে হল? সেদিন বা আজও সিবিআই-এর একটাই উত্তর, এমন সম্ভাবনার কথা তারা ভাবতেও পারেনি।
তাই প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীর পাশাপাশি সিবিআই-কে চেপে ধরতে চাইছে বিরোধীরা। তাঁদের প্রশ্ন, ২০১৫ সালের ১০ অক্টোবর মালিয়ার বাড়ি ও অফিসে অভিযান চালিয়ে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, নথি বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। তাহলে সিবিআই কীভাবে বলছে তাদের হাতে প্রমাণ বা সাক্ষী ছিল না?