গোটা কেরালা বন্যায় বিধ্বস্ত। সবে শুরু হয়েছে ঘুরে দাঁড়ানোর কাজ। ঠিক এই সময়েই রাজ্যবাসীকে ফেলে রেখে চিকিৎসা করাতে সস্ত্রীক আমেরিকা উড়ে গেলেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাজ্যবাসী। সমালোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলেও।
দক্ষিণ ভারতের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে গর্বের শেষ নেই দেশের বামপন্থীদের। গত বছর উত্তরপ্রদেশের হাসপাতালে শিশু মৃত্যুর পর মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে কটাক্ষ করে কেরালায় ঘুরে এখানকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা শিখে আসার পরামর্শ দিয়েছিল বামপন্থী মহল। সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে বিজয়ন কীভাবে রাজ্যের এমন সংকট সময়ে আমেরিকায় গেলেন, সেই প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।
কংগ্রেসের প্রশ্ন, দলেরই পলিটব্যুরো সদস্য বিজয়নের এত আমেরিকা প্রীতি কেন? গত মার্চ মাসেও তিনি গিয়েছিলেন মার্কিন মুলুকে। তখনও তিনি নাকি ‘চেক আপ’ করিয়েছিলেন। সেই সময়েই ঠিক করেছিলেন, ফের যাবেন। বন্যার জন্য আগস্ট মাসে যেতে পারেননি। তা মিটতেই ফের মার্কিন মুলুকে গিয়েছেন।
জানা গেছে, মিনেসোটা রাজ্যের রচেস্টারের মেয়ো ক্লিনিকে চিকিৎসা চলছে বিজয়নের। কিন্তু কী হয়েছে, তা সরকারিভাবে জানানো হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী বলে গিয়েছেন, তিনি রুটিন চেক আপে যাচ্ছেন। ব্যস, তার বেশি কোনও প্রশ্ন তুললেই সমস্যা। ফেসবুকে কাসারগোড় জেলার এক যুবক এই বিষয়ে প্রশ্ন করায় তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা দায়ের করেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, মন্ত্রিসভার কোনও সদস্যকে রাজ্য পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে যাননি বিজয়ন। একমাত্র তাঁর ঘনিষ্ঠ শিল্পমন্ত্রী ই পি জয়রাজনকে ত্রাণ গ্রহণের দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছেন। তাতে সমস্যা হচ্ছে। আবার রাজ্য সরকারি কর্মচারী এবং শিক্ষকদের একদিনের বেতন বন্যাত্রাণে দেওয়ার কথা জানিয়েছে সরকার। তার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদে সরব বিরোধীরা। দলের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী সরকারি টাকায় বিদেশে, আর রাজ্যে জোর করে টাকা আদায় করা হচ্ছে। এই ইস্যুতেই সরব হয়েছে বিরোধী কংগ্রেস। সব মিলিয়ে বন্যা মিটতেই কেরলে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক ঝড়।