কথায় আছে, ‘পাগলে কি না বলে, আর্….’। ক্ষমতা হাতছাড়া হয়েছে, জনতা মুখ ফিরিয়েছে, দলের অস্তিত্ব প্রবল সঙ্কটে। স্বাভাবিক ভাবেই মাথার ঠিক নেই সূর্য-বিমানের। কিন্তু তাই বলে এতটা! শেষে কিনা বলে বসলেন, তাঁদের জোরদার হরতাল আন্দোলনের জেরেই নাকি বাধ্য হয়ে দাম কমিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনই দাবি সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের। যা শোনার পর হাসছে আলিমুদ্দিনের চেয়ার টেবিলগুলোও। সেসবে অবশ্য পাত্তা দিচ্ছেন না সূর্যকান্ত। তাঁর প্রলাপ বকা চলছেই।
আলিমুদ্দিন থেকে সূর্যকান্ত মিশ্র দাবি করেছেন, ‘পেট্রোল ডিজেলের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের কাছেও রাজস্ব বাবদ অতিরিক্ত আদায়ের ক্ষেত্রে ছাড় ঘোষণার দাবি আমরা অনেকদিন ধরেই করছিলাম। ২০০৮ সালে বামফ্রন্ট সরকার প্রথম এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। সারা দেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও বাম ও সহযোগী দলগুলির ডাকে ১২ ঘণ্টার হরতালে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী পেট্রোল ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ১ টাকা কমাতে বাধ্য হয়েছেন। রাজ্য জুড়ে লড়াইয়ের ময়দানে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহনই যে দাবি আদায়ের একমাত্র পথ, এর মধ্যে দিয়ে আবার স্পষ্ট হল’।
বাস্তবের সঙ্গে সূর্যকান্তের এই মন্তব্যের কোনও মিল নেই বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। তাঁদের মতে, বাংলাতে ভারত বনধের কোনও প্রভাব পড়েনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মনাশা বনধের বিরোধী। সাধারণ মানুষও পথে নামা অবরোধকারীদের হটিয়ে গন্তব্যে গিয়েছেন। স্কুল-কলেজ-অফিস-কাছারি আর পাঁচটা দিনের মতোই ছিল কর্মব্যস্ত। এই চিত্র দেখে যদি সূর্যকান্ত মনে করেন হরতাল সফল হয়েছে, তাহলে সেটা দিবাস্বপ্ন ছাড়া আর কিছু নয়। আর পেট্রোল-ডিজেলে লিটার প্রতি ১ টাকা দাম কমিয়ে বরং কেন্দ্রের মোদী সরকারকেই ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সিদ্ধান্ত একান্তই তাঁর রাজনৈতিক দূরদর্শিতার পরিচায়ক। এর সঙ্গে সূর্যকান্ত-বিমান বসুদের হরতাল আন্দোলনের কোনও সম্পর্ক এ কথা বলাই বাহুল্য।