তীব্র বায়ুদূষণের সঙ্গে মানুষের বুদ্ধি কমে যাওয়ার সম্পর্ক থাকতে পারে বলে নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে। চীনের পিকিং ইউনিভার্সিটি ও যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটির যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া যায়। চার বছর ধরে চীনের ২০ হাজার মানুষের ওপর জরিপ চালিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। গবেষকদের মতে, বর্তমানে এমন এক সময় চলছে, যখন শহরাঞ্চলের ৮০ শতাংশ লোক অনিরাপদ বায়ুদূষণের মধ্যে আছেন। তাই গবেষণাটি বিশ্বব্যাপী প্রাসঙ্গিক। ওই গবেষণায় বায়ুদূষণের শিকার ব্যক্তিদের গণিত ও মৌখিক কিছু পরীক্ষা দেওয়া হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল তাদের বুদ্ধিমত্তা যাচাই করা। গবেষেকরা দেখেছেন, যে বা যারা বায়ু দূষণের শিকার, তারা সেসব পরীক্ষায় ভালো করতে পারেননি। গবেষণায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের বুদ্ধিমত্তা যাচাই করার জন্য ২৪টি গণিত ও ৩৪টি শব্দ চিহ্নিত করার প্রশ্ন দেওয়া হয়েছিল। গবেষকরা বলছেন, পূর্বের গবেষণার ফলের সঙ্গে সাম্প্রতিক গবেষণার ফল মিলে গেছে। এদিকে,বিবিসির খবরে জানানো হয়, পরীক্ষায় ভালো করা বা না করা এবং বায়ুদূষণের মধ্যে সম্পর্ক থাকলেও বায়ুদূষণের কারণ ও প্রভাব নিয়ে কোনো কিছু প্রমাণ হয়নি এ গবেষণায়। বায়ুতে সালফার ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড এবং ১০ মাইক্রোমিটারের ছোট ধূলিকণা পরিমাপ করেছেন। কিন্তু বায়ুদূষণে এ তিনটি উপাদানের মধ্যে কোনটা কতটা দায়ী, তা পরিমাপ করা হয়নি। ইয়েল স্কুল অব পাবলিক হেলথের গবেষক শি চেন বলেন, ‘গবেষণায় আমরা যেসব নমুনা সংগ্রহ করেছি তার মাধ্যমে আমরা বোঝার চেষ্টা করেছি যে, কোন বয়সের মানুষের ওপর বায়ুদূষণ কতটা প্রভাব ফেলে। আমাদের প্রাপ্ত তথ্য নতুন একটি বিষয়।’
প্রসঙ্গত,গবেষকদের মতে, যারা বায়ুদূষণের শিকার হচ্ছেন, তাদের মগজ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। বায়ুতে যেসব দূষণ কণিকা থাকে, সেগুলো ছোট রাস্তা দিয়ে সরাসরি মগজে গিয়ে পৌঁছয়। দূষণের শিকার অনেকের মাঝে মানসিক সমস্যাও তৈরি করতে পারে। এদের মধ্যে অনেকে মানসিক চাপে ভুগতে থাকেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে ৭০ লাখ মানুষ অপরিণত বয়সে মারা যায়। এ ছাড়া ৯১ শতাংশ মানুষ এমন জায়গায় বসবাস করেন, যেখানে বায়ুদূষণের মাত্রা ডব্লিউএইচওর অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে বেশি। পৃথিবীর যে ২০টি শহর সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণের শিকার, বাংলাদেশের ঢাকা তার মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।