জাতীয় নাগরিক পঞ্জী নিয়ে সংসদে বুক চাপড়েছিলেন অমিত শাহ। সেই প্রাথমিক আস্ফালন, অত্যুৎসাহের পর বিজেপি নেতারা দেখছেন ব্যাপারটা খুব সহজ-সরল নয়। দু’দিনের কর্মসমিতির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এনআরসি নিয়ে কর্মীদের সতর্ক করে বলেছেন, তাড়াহুড়ো ঠিক নয়। সব মিলিয়ে জাতীয় নাগরিক পঞ্জী নিয়ে প্যাঁচে মোদী সরকার।
বিরোধীরা তো বটেই, দেশের অন্যান্য সংগঠনও এনআরসি নিয়ে সোচ্চার হয়েছে। সর্বভারতীয় নমশূদ্র বিকাশ পরিষদের নেতারা কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে গিয়ে তাঁর সাহায্য চেয়েছেন। জানিয়েছেন, এনআরসি মানছেন না তাঁরা। মোদি সরকারের ‘শরণার্থী তত্ত্ব’-এ ভরসা নেই তাঁদের।
আসামে এনআরসি তালিকা তৈরির কাজ শুরু হওয়ার পর বাংলার বিজেপি নেতারাও রে-রে করে আসরে নেমে পড়েছিলেন। সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য নেতারা নিয়ম করে হুমকি দিচ্ছিলেন, আসামের পর বাংলাতেও তালিকা তৈরি হবে। এবং বহিরাগতদের ঘাড়ধাক্কা দিয়ে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে। বিজেপি নেতাদের এমন ‘আলপটকা’ মন্তব্যে হীতে বিপরীত হয়েছে। তাই জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে অমিত শাহ বিজেপি নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন, এনআরসি তালিকা তৈরির পর কীভাবে বহিরাগতদের দেশ থেকে তাড়ানো হবে – এমন বিষয়গুলি যেন উহ্য রাখা হয়। কারণ, বিজেপি নেতাদের উপলব্ধি, এনআরসি নিয়ে দেশবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে।
শুরুর দিকে বিজেপির পরিকল্পনা ছিল, লোকসভা নির্বাচনের আগে এনআরসি-কে প্রচারের হাতিয়ার বানানো হবে। কিন্তু গোটা দেশেই এনআরসি নিয়ে ক্ষোভ বাড়ায় আপাতত সেই পরিকল্পনায় জল ঢালতে বাধ্য হয়েছে তারা। বিষয়টি নিয়ে বিজেপি যে বেশ অস্বস্তিতে তা নির্মলা সীতারামনের সাংবাদিক বৈঠকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। দলের রাজনৈতিক প্রস্তাবে এনআরসি আছে কিনা জানতে চাওয়ায় সীতারামন বলেছিলেন, এটা নতুন কোনও বিষয় নয়। গত দশ বছরে সব কর্মসমিতির বৈঠকের রাজনৈতিক প্রস্তাবে বিষয়টির উল্লেখ ছিল। এবারও আছে’।