মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন দেশের অর্থনীতির ভরাডুবি হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দিল্লীতে কপিল সিব্বলের বই ‘শেডস অফ ট্রুথ’ এর অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করতে এসে কড়া ভাষায় তার জবাব দিলেন প্রাক্তণ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন।
নোটবন্দী এবং বেকারত্ব নিয়ে নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর সরকারকে কার্যত তুলোধনা করেছেন তিনি।পাশাপাশি, চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা পালন না করায় জনগণের বিশ্বাসভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ করেন মনমোহন। বলেন, ‘২০১৪তে সরকারে আসার আগে মোদী যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার একটাও পালন করতে পারেননি। বিমুদ্রাকরণ করে কালো টাকা উদ্ধার করতে পারেননি। বছরে ২ কোটি বেকারকে চাকরি দিতে পারেননি। এমনকি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তিস্থাপনও করতে পারেননি’।
ঘটনাচক্রে কয়েকদিন আগেই রিজার্ভ ব্যঙ্ক জানিয়েছে, নোটবন্দীর পর ৯৯.৩ শতাংশ নগদই ব্যঙ্কিং ব্যবস্থায় ফেরত এসেছে। এই তথ্যকে সামনে রেখেই মনমোহন প্রশ্ন তোলেন কোথায় গেল কালো টাকা? মোদীর সেই দূর্বল জায়গাতেই খোঁচা দিয়ে মনমোহন বলেন, ‘বিদেশের মাটি থেকে কোটি কোটি কালো টাকা ফিরিয়ে আনার জন্য কোনও সংগঠিত পদক্ষেপই নেয়নি মোদী সরকার’।
জিএস টি নিয়েও মোদীকে আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, ‘ত্রুটিপূর্ণ জিএসটি ব্যবসা-বানিজ্যকে শেষ করে দিয়েছে’। একই সঙ্গে প্রাক্তনীর খোঁচা, ‘সেইসব মূল্যবোধ এবং আদর্শ, যা রক্ষা করা যেকোনও গণতান্ত্রিক শক্তিরই দায়িত্ব, সেই সবকিছুই জলে ভাসিয়ে দিচ্ছে এই সরকার’।
বিরোধী থাকাকালীন মনমোহন সরকারের বিরুদ্ধে নীতি পঙ্গুত্বের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন মোদী। সেই প্রসঙ্গ টেনে কংগ্রেসের কপিল সিব্বলও আক্রমণ শানান মোদীর বিরুদ্ধে। প্রশ্ন তোলেন, ‘আমাদের আমলে নীতি পঙ্গুত্ব ছিল। আমরা না-কি দেশকে এগিয়ে নয়ে যেতে পারছিলাম না! কিন্তু এই নীতি-পঙ্গুত্বই দেশকে ৮.২ শতাংশ জিডিপি দিয়েছিল। আর এখন কী হচ্ছে? এখন তো নিশ্চয় নীতি-পঙ্গুত্ব নেই। তা হলে উন্নয়নের হার কোথায়?’ সাফ জানিয়ে দেন, ‘বিকল্প মতাদর্শের পথে হাটা ছাড়া দেশের অন্য কোনও বিকল্প নেই’।