রাজ্যের কোনও উড়ালপুলেই আর ২০ চাকার গাড়ি উঠতে দেওয়া হবে না। এমনই নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি ২০টি ব্রিজের বেহাল অবস্থার কথা জানিয়ে প্রশাসনকে সেই সব ব্রিজের সংস্কারের জন্য উদ্যোগী হতে বলেন তিনি। উড়ালপুলে ওভারলোডেড গাড়িও যাতে উঠতে না পারে সেজন্য পুলিশকে কড়া নজর রাখতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, ‘কোথাও কোনও সেতুর নীচে কাউকে থাকতে দেওয়া হবে না। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। কোনও সেতুর ওপরই বিটুমিনের বোঝা বাড়িয়ে প্যাচ ওয়ার্ক করা যাবে না। যে গাড়ির নয় টন ওজনের পণ্য পরিবহণ করা উচিত, তারা ১৫ টন বহন করছে। এমন চলবে না।’ ব্রিজের হাল হকিকত খতিয়ে দেখতে মুখ্যমন্ত্রী তৈরি করেছেন ব্রিজ ইন্সপেকশন অ্যান্ড মনিটরিং সেল। একইসঙ্গে মাঝেরহাট ব্রিজের দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্তকারী কমিটি গড়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যের অন্যান্য উড়ালপুলের অবস্থা নিয়ে বৃহস্পতিবার নবান্নে বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী।পরে তিনি জানান, মাঝেরহাট সেতুর শুধুমাত্র ভাঙা অংশ মেরামত করা হবে নাকি নতুন করে গোটা সেতুটিই তৈরি করা হবে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিশেষজ্ঞ কমিটি। সেতুভঙ্গের দায় কার? মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি তদন্ত করে তার রিপোর্ট দেবে।দোষী যাঁরাই হোন কেন, কেউ ছাড়া পাবেন না। এদিন এমনটাই আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
এদিন বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পূর্তসচিব অর্ণব রায়ের কাছে জানতে চান, কেন ছ’বার টেন্ডার ডেকেও মাঝেরহাট সেতু সারাইয়ের কাজ শুরু করা গেল না? বর্তমান পূর্তসচিব কেন তাঁর পূর্বসূরি ইন্দিবর পাণ্ডে ও অর্থ দফতরের সঙ্গে কথা বলেননি তাই নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মাঝেরহাট-কাণ্ডের মতো দুর্ঘটনা আর যাতে না ঘটে সেজন্য একাধিক উদ্যোগ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, সাঁতরাগাছি, উল্টোডাঙা, বেলগাছিয়া, শিয়ালদহ, ঢাকুরিয়া, চিংড়িহাটা, মাঝেরহাট-সহ ২০টি উড়ালপুল সারাইয়ের কাজ দ্রুত শুরু করবে সরকার। উল্টোডাঙা উড়ালপুলের মেরামতি নিয়ে রেলের সঙ্গে কথা হবে বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানান। পূর্ত দফতর, সেচ দফতর ও কেএমডিএ-র অধীনে থাকা সেতুগুলির রক্ষণাবেক্ষণে আলাদা আলাদা সেল তৈরি করবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।