টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত বঁাকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, ঝাড়গ্রাম–সহ বেশ করেকটি জেলা। বঁাকুড়ায় জলের তোড়ে ভেসে গেছেন এক বৃদ্ধ। ধসে গেছে একটি পাকা দোতলা বাড়ি। বিভিন্ন ব্লক জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। জলমগ্ন হয়ে পড়ছে ঝাড়গ্রামেরও বেশ কিছু এলাকা। পুরুলিয়ায় প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তা দেখতে না পেয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে যায় একটি বাস। একজনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
বঁাকুড়ায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য প্রশাসন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। ইতিমধ্যেই বঁাকুড়া ২ নম্বর ব্লকে দু’টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সোমবার বিকেল পর্যন্ত সেখানে ৬০০–র বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। ক্যুইক রেসপন্স টিমের দু’টি দল ও অসামরিক প্রতিরক্ষা দপ্তরের স্বেচ্ছাসেবকদের মোতায়েন করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে স্পিড বোট।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে জল বাড়ছে ডিভিসি–র পাঞ্চেত এবং মাইথন জলাধারে। তাই অল্প অল্প করে ওই দুই জলাধার থেকে দফায় দফায় জল ছাড়া শুরু হয়েছে৷ ডিভিসি–র জনসংযোগ আধিকারিক বিজয় কুমার জানান, সোমবার সকাল ছটায় পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৯৫০০ কিউসেক এবং মাইথন জলাধার থেকে ৫২৫০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে৷ এই হারে জল ছাড়ায় কোনও আশঙ্কার কারণ নেই৷ তবে নিম্নচাপ ঘণীভূত হওয়ায় দক্ষিণবঙ্গে এবং সীমান্তবর্তী ঝাড়খণ্ডে যে পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে তাতে এই দুটি জলাধারে ওপর জলের চাপ বাড়বে।’
বঁাকুড়া শহর–সহ জলমগ্ন বঁাকুড়া ২ নং, মেজিয়া এবং গঙ্গাজলঘাটি ব্লক। মেজিয়া থানার পূর্ণিয়া গ্রামের কাছে এক বৃদ্ধ জলের তোড়ে ভেসে গেছেন। তঁার নাম গুণময় ভাণ্ডারী (৬০)। তবে আশ্চর্যের ঘটনা শহর লাগোয়া জুনবেদিয়া এলাকায় একটি পাকা দোতলা বাড়ি জলের তোড়ে ভেঙে পড়েছে। ওই বাড়িতে মা–মেয়ে ভাড়া থাকতেন। তঁারা আহত হয়েছেন। রাইপুরে মাটির দেওয়াল ধসে পড়লে তার নিচে চাপ পড়ে যান চার গ্রামবাসী। তঁাদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা বেশ গুরুতর। জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস জানিয়েছেন, এই দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য তঁার প্রশাসন পুরো মাত্রায় প্রস্তুত আছে।
জলমগ্ন হয়ে পড়েছে ঝাড়গ্রাম। শতাধিক মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু এলাকায় এদিন সকালে জল ঢুকে যাওয়ায় ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ঝাড়গ্রাম শহরের ঘুনাথপুর, দমকানন, বাছুরডোবা, নতুনডিহি, পুরানো ঝাড়গ্রাম, রেলকোলনি, কদমকাননের আদিবাসী পাড়া ইত্যাদি এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। এদিকে প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে পুরুলিয়ায় একটি যাত্রিবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে উল্টে গেলে মৃত্যু হয় একজনের। মৃতের নাম সন্তোষ রাজোয়া (৩৮)। বাড়ি আড়ষা থানার জাঙ্গিদিরি গ্রামে। জখম হয়েছেন চারটি বাচ্চা–সহ মোট ২০ জন।