‘ভালবাসা মানে বিভাজনের রাজনীতি নয়’। দিল্লিতে কনস্টিটিউশন ক্লাবে আর্চ বিশপদের এক সেমিনারে বক্তব্য রাখার সময়ে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করে মন্তব্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আসাম এনআরসির দ্বিতীয় খসড়া তালিকা নিয়ে এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন মমতা।
আসামের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নাগরিক পঞ্জীর নামে মাতৃভূমিকে ভাগের চক্রান্ত করছে বিজেপি। ভারতের প্রতিটি অংশ মাতৃভূমির অঙ্গ। সেখানে যাঁরা বাস করেন তাঁরা আমাদেরই একজন। এতদিন যাঁরা ভারতে রয়েছেন, আচমকা তাঁদের বিদেশী বলে দেওয়া হচ্ছে। তারা কোথায়ে যাবেন? এটা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিভেদের রাজনীতি করে দেশভাগে মদত দিচ্ছে বিজেপি।”
‘লাভ ইয়োর নেবর’ শীর্ষক আলোচনায় মমতা বলেন, “বিদেশিদের ভারতে অতিথি বলে আপ্যায়ণ করে থাকে। অতিথিকে তাড়িয়ে দেওয়ার সংস্কৃতি ভারতের নয়।” বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন এই পরম্পরা ভেঙে ফেলতে চাইছে দেশের শাসক দল। ভারতীয় সংস্কৃতীর ধারা বোঝাতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ঐতিহ্য সংস্কৃতি সংকটের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবেশীদের ভালবাসতে হবে। কারণ এটাই ভারতের সংস্কৃতি। বাংলাদেশ, পাকিস্তান একসময় অখণ্ড ভারতের অংশ ছিল। তাই তাঁদের সঙ্গে খারাপ আচরণ মানায় না।”
আসাম নিয়ে উদ্বেগ ধরা পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বাংলায় এনআরসি তালিকা তৈরির প্রস্তাবকে সমালোচনা করে মমতার প্রশ্ন বলেন, “বিজেপি বলছে এবার পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হবে। তারপর উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থানেও হবে। বিজেপি কী বোঝাতে চাইছে ক্ষমতায় থাকলেই দেশে থাকা যাবে?”
এনআরসির নামে বিজেপি যে মেরুকরণের রাজনীতি করছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই তা পরিষ্কার। দেশকে ভাগাভাগির হাত থেকে বাঁচাতে সকল সম্প্রদায়, জাতি, বর্ণের মানুষকে জোটবদ্ধ হওয়ার আহ্ববান জানিয়ে তাঁর অভিযোগ বিজেপির শাসনকালে সাংবিধানিক সব প্রতিষ্ঠানই আক্রান্ত। এই পরিস্থিতি বেশিদিন চলবে না বলেও তাঁর বিশ্বাস। ১৯শের ভোটেই ‘পরিবর্তন’ আসন্ন বলে দাবি করেন জাতীয়স্তরে বিজেপি বিরোধী জোটের অন্যতম কারিগর।