এটাই বাংলা। হাজার চেষ্টা করুন আগুন লাগাতে চৈতন্য আর জসিমুদ্দিনের মাঝে। এখানে ফেজ টুপি তবু জল আর ডেটল হাতে অপেক্ষা করবে শিবভক্তের জন্য। অনেকটা হাঁটার পর পায়ের ক্ষততে মলম লাগাতে। শিবের মাথায় জল ঢালার আগে পানি এগিয়ে দিয়ে তেষ্টা নিবারণ করাতে।তারপর ফের সে এগিয়ে যাবে। ভোলে বাবা পার কারেগা।
এখানে বিসমিল্লার সানাই বাজে হিন্দু বিয়েতে। এখানে ঈদের নামাজের আগে মাইক বাঁধে হিন্দু ছেলে। এখানে দেবীর মূর্তি বানায় গফুর চাচা। এখানে সবচেয়ে বড় দুর্গা মন্ডপ বানায় এক মুসলিম আয়োজক। এখানে মহরমের মিছিল পাহারা দেয় সেন,ঘোষ,মিত্তির।
এখানে বিরিয়ানি আর খিচুড়ির সুক্ষ তফাৎ করে দেয় বলির পাঁঠা আর হালালের গোস্ত। এখানেই আয়াত আর মন্ত্রোচ্চারণ মেশে টিপু সুলতান মসজিদ আর বেলুড় মঠে।
বাঙালির সব গেছে। বাঙালিয়ানাটা যেতে দেবেন না। ওটা গেলে নবরাত্রির গরবা থাকবে, অস্ত্রের মিছিল থাকবে, রামের জন্য বুন্দি কা লাড্ডু, করওয়াচৌথ থাকবে কিন্তু বিজয়ার মিষ্টিমুখ আর দশমীর সিঁদুরখেলার ঐতিহ্য থাকবে না, অন্নপূর্ণা পুজো থাকবে না। ঈদের দাওয়াত থাকবে না।
রাম ও তার ছেলেপুলেদের আসুন কীর্তন শোনাই, লালনগীতি গাই, ফকিরা, বাউল শোনাই। অনাদি খুঁড়ো আর গফুর চাচার গল্প শোনাই। নকশী কাঁথার মাঠে নিয়ে যাই। অন্নদামঙ্গল শোনাই। মাইকেল মধুসূদন পড়ে শোনাই। সুমন গাই। লালনে প্রাণ পাই। এটা বাংলা, সেবায়ত আর ইনায়তের। এখানে এরকম আরো ছবি দেখা যাবে এখন।
( মতামত লেখকের ব্যক্তিগত )