আগামী লোকসভা নির্বাচনে মোদি বিরোধী ‘মহাজোটকে’ পূর্ণ আকার দিতে ডিসেম্বরে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে ‘মহাসমাবেশ’-এর আয়োজনের পরিকল্পনা মমতার। সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানো হবে বিজেপি বিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে।
মোদি বিরোধী ফেডারেল ফ্রন্টের সলতে পাকাতে মার্চ মাস থেকেই বিজেপি বিরোধী সব আঞ্চলিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন তৃণমূল নেত্রী। ৩০ আগস্ট তামিলনাড়ু যাচ্ছেন মমতা। ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিনের ডাকে চেন্নাইতে বিরোধী দলের এক জমায়েতে অংশ নেবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তবে তার আগে বিজেপি বিরোধিতার মন্ত্রকে বাংলার আপামর জনতার কাছে পৌঁছে দিতে এবারের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ মঞ্চকেই বেছে নিয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, বাংলা থেকে শুরু করছি। ২১ জুলাইয়ের এবার ২৫’এ পা। সেই মঞ্চ থেকেই দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা, সহিষ্ণুতা আর একতা রক্ষায় শামিল হব সবাই। মমতা বলেন, চেয়েছিলাম সমাবেশ এবার ব্রিগেডে করতে। কিন্তু বর্ষার মধ্যে তাতে অসুবিধা হত। পরে ঠিক করলাম, সব বিরোধী দলকে নিয়ে ডিসেম্বরে ব্রিগেডেই সভা করব।
রাজনাতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, বছর শেষে ব্রিগেডে সভা করে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চান তৃণমূল নেত্রী। একদিকে বিজেপি বিরোধী জোটের চেহারা সর্বসমক্ষে তুলে ধরা, অন্যদিকে তিনিই যে সেই জোটের ‘মাসিহা’ তা বুঝিয়ে দেওয়া।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ‘একের বিরুদ্ধে এক’ প্রার্থী দেওয়ার কৌশল নিয়ে বিজেপিকে মোকাবিলা করতে তৎপর তৃণমূল। গত কয়েকমাস ধরেই সর্বভারতীয় স্তরে এই বার্তা দিচ্ছেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, যে রাজ্যে যে দল শক্তিশালী সেখানে সেই দলকে প্রাধান্য দিয়ে বিরোধী জোটের আসন সংখ্যা বাড়িয়ে নেওয়া উচিত।
মমতা ফেডারেল ফ্রন্টের কথা বললেও কংগ্রেসেকে বাদ দিয়ে বিজেপি বিরোধী জোট যে শক্তিশালী হবে না, তা-ও জানেন। তাই কংগ্রেস নেতৃত্বকে তিনি বারবার আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে সমঝোতা বা আসন বণ্টনে জোর দেওয়ার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন। রাহুল গাঁধী’র সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব থাকলেও মমতা’র সঙ্গে সনিয়া গাঁধীর সম্পর্ক বরাবর ভাল। মার্চ মাসেই সনিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন মমতা। এই অবস্থায় তৃণমূলের প্রস্তাবিত ব্রিগেড সভায় কংগ্রেস থাকবে কিনা, সেদিকে নজর মোদী-শাহ জুটির। তৃণমূল নেত্রীর কথায়, ‘‘আমরা বিজেপি-বিরোধী সবাইকে নিয়েই সভা করব।’’
গেরুয়া বাহিনীর বিকল্প জোট গঠনের মঞ্চ কলকাতা হয়ে ওঠে কিনা সেদিকেই এখন নজর গোটা দেশের।