সময়ের ফেরে কত কিছুই না দেখতে হয়।‘ধর্ম হল সমাজের আফিম’ এই মত যারা পোষন করে সেই কমিউনিস্ট সিপিএমই এবার এক মাস ধরে পালন করতে চলেছে ‘রামায়ণ মাস’। কেরলে ১৭ জুলাই থেকে ১৬ অগস্ট, টানা এক মাস ‘রামায়ণ মাস’ পালন করবে কেরল সিপিএম।
ভোটে হারতে হারতে দল এখন চরম সংকটে। আন্দোলনের কর্মী, সমর্থক মেলে না। তাই কী অস্তিত্ব বাঁচাতে ধর্মীয় আবেগে সুড়সুড়ি দিয়ে ‘রাম’এর হাত ধরতে হচ্ছে ইয়েচুরি, কারাতদের। সত্যি নামবুদরিপাদ, জ্যোতিবাবুর দলের বর্তমান বীরপুঙ্গব নেতৃত্বের ভোলবদলে অবাক সকলে। এতসবেও তাঁরা অবশ্য ‘স্পিকটি নট’। অথচ এঁরাই আবার রে-রে করে উঠেছিলেন সুভাষ চক্রবর্তী তারাপীঠে পুজো দেওয়ায়। দলের মধ্যেই গেল গেল রব উঠেছিল গত বছর কেরলের মন্দির বিষয়ক মন্ত্রী কে সুরেন্দ্রন স্থানীয় গুরুভায়ুর মন্দিরে পুজো দেওয়াকে কেন্দ্র করে।
১৭ জুলাই থেকে ১৬ অগস্ট, এক মাস ধরে মলয়ম পালনের রেওয়াজ আছে দক্ষিণী রাজ্য কেরলে। এই সময় ‘রামায়ণ মাস’ হিসাবেও পরিচিত। প্রচলিত নিয়মে অনেক হিন্দু পরিবারই এই সময়ে প্রতিদিন রামায়ণ পাঠ করেন। এ বার মলয়ম পালন করবে পিনারাই বিজয়নের সরকার। জেলা ভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান হবে, সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠানটি হবে ২৫ জুলাই । অনুষ্ঠানগুলিতে হিন্দু বেদ এবং রামায়ণ নিয়ে আলোচনা হবে।
হঠাৎ সিপিএমের এই সিদ্ধান্ত কেন? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষদের ব্যাখ্যা, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে কোনওভাবেই ধর্মীয় ভাবাবেগকে হাতিয়ার করে বিজেপি যাতে কেরলে মাটি পোক্ত করতে না পারে, তার জন্য রামকে হাতিয়ার করছে সিপিএম।
অবশ্য কেরল সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য ভি শিবদাসানের সাফাই, এই উৎসবের আয়োজন করেছে সংস্কৃত সংঘ। সিপিএম কোনওভাবেই এর সঙ্গে যুক্ত নয়।
এ যেন ‘ধরি মাছ, না ছুই পানি’। আসলে সংস্কৃত সঙ্ঘম সংগঠনটি সিপিএমেরই সহযোগী সংগঠন। প্রকাশ্যে মানতে না চাইলেও দলীয় সূত্রে খবর, নামে আয়োজক ওই সংগঠন হলেও রামায়ণ মাস নিয়ে সব পরিকল্পনা সিপিএমেরই।
এই খবর প্রকাশ পেতেই সিপিএমকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি গেরুয়া বাহিনী’। অনেক তাব়ড় সিপিএম কর্মী, সমর্থকও ছ্যা ছ্যা করছেন।
সিপিএম প্রমাণ করল তারা ধর্মেও আছে. জিরাফেও আছে। ঠেকায় পড়লে ধর্ম যেন মধুভাণ্ড।