দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নির্বাচনী ফলাফলেই স্পষ্ট জনপ্রিয়তা কমছে গেরুয়া শিবিরের। রাজনৈতিক পরিস্থিতি আয়ত্তে নেই মোদী শাহ জুটির। সে কারণে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব দলের প্রায় ১৫০ জন বর্তমান সাংসদকে ২০১৯এরলোকসভা ভোটে আপাতত টিকিট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বর্তমানে লোকসভায় বিজেপির সাংসদ সংখ্যা ২৭৩ জন। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে বিজেপির বর্তমান সাংসদদের শতকরা ৫০ ভাগই টিকিট পাবেন না। এঁদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান মন্ত্রীসভার বেশ কয়েকজন ছোটবড় মন্ত্রী। সূত্রের খবর অসুস্থতার কারণে সুষমা স্বরাজ টিকিট না-ও পেতে পারেন। পটনা থেকে শত্রুঘ্ন সিনহা, দ্বারভাঙা থেকে কীর্তি আজাদকে টিকিট দেওয়া হবে না প্রায় নিশ্চিত। উমা ভারতী, রাধামোহন সিংহ, স্পিকার সুমিত্রা মহাজন ভোটে না লড়াইয়ের ইচ্ছার কথা দলকে জানিয়েছেন । মুরলী মনোহর জোশী, কারিয়া মুন্ডা, শান্তা কুমার, খাণ্ডুরির মতো প্রবীণেরা বয়সের কারণে বাদ পড়তে পারেন। যদিও ব্যক্তিত্বের কথা মাথায় রেখে লালকৃষ্ণ আডবাণীকে হয়তো এবারও টিকিট দিতে পারে বিজেপি।
গত লোকসভা নির্বাচনে গোবলয় সহ কিছু রাজ্যে বিজেপি প্রায় সব আসনেই জিতেছিল। যেমন রাজস্থানে তারা ২৫টি আসনই জেতে। হিমাচলে ৪টি, দিল্লিতে ৭টি আসনের প্রতিটিই গেরুয়া শিবিরের ঝুলিতে যায়। উত্তরপ্রদেশে ৮০টি আসনের মধ্যে ৭১টি, ছত্তীসগঢ়ে ১১টার মধ্যে ১০টি, মধ্যপ্রদেশে ২৯টির মধ্যে ২৭টি পায় তারা। বিহারেও তাদের সাফল্য ছিল চোখে পড়ার মতো।
এ বার বিজেপির আশঙ্কা, আসন্ন নির্বাচনে এই রাজ্যগুলোতে আসন সংখ্যা কমবে। স্থানীয় অনেক সাংসদের বিরুদ্ধে অসন্তোষ মাথীচাড়া দিয়েছে। সে কারণেই এই সব রাজ্য থেকে বর্তমান ১৫০ সাংসদকে সরিয়ে নতুন মুখ ভোটে দাঁড়করানোই বিজেপির কৌশল। বিজেপিতে এবার প্রার্থী বাছাইয়ে সব চেয়ে বড় নির্ধারক হচে চলেছে, ‘জেতার ক্ষমতা’।
ভোটের প্রচারে এর আগে প্রযুক্তির ব্যবহার করেছে বিজেপি বর্তমান সাংসদের জনপ্রিয়তা বুঝতে সেই প্রযুক্তিরই সাহায্য নিচ্ছে মোদী, শাহ জুটি। প্রধানমন্ত্রী নমো-অ্যাপের মাধ্যমে এবং বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে সাংসদদের কাজের মূল্যায়ন চলছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে বর্তমানবে কয়েকজন সাংসদকে কাজ করার ব্যাপারে সতর্ক করেছে পরিষদীয় দল।
বিজেপি সূত্রের খবর, যাঁদের প্রার্থী করা হবে, তাঁদের উগ্র হিন্দুত্ববাদী চরিত্র বা পরিচিতি থাকলে ভাল। বিজেপি মনে করছে, কয়েকটি রাজ্য থেকে এ বার আসন বাড়বে। অসম, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গে আসন বাড়ানোর চেষ্টা করছে তারা। তবে দলের অন্দরে বিতর্ক ও গোষ্টীবাজি এড়াতে আগামী লোকসভায় টিকিট দেওয়া, না দেওয়ার বিষয়টি স্ক্রিনিং কমিটির মাধ্যমেই করছে গেরুয়া শিবির।
২০১৯এরলোকসভায় জয় সহজ হবে না বুঝতে পারছে বিজেপি শিবির। তাই বর্তমান সাংসদদের বাদ দিয়ে লড়াইয়ের ময়দানে নতুনদের এনেই বাজিমাতের কৌশল মোদী, অমিত শাহদের।