ভাত কিংবা রুটি- দুই খাবারই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা খেতে পারেন। তবে পুষ্টিবিজ্ঞান বলছে পরিশোধিত চাল ও আটার চাইতে বাদামি চাল ও অপরিশোধিত গমের আটা কিংবা বেসনের রুটি ডায়াবেটিকদের জন্য উপযুক্ত।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে ডায়াবেটিকদের জন্য রুটি নাকি ভাত ভালো সেই বিষয়ে একটা ধারণা এখানে দেওয়া হল।
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স:
বিভিন্ন ধরনের চালের ভাত ও রুটির ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’য়ের মাত্রা ভিন্ন। কার্বোহাইড্রেট’কে গ্লুকোজের পরিণত করে একটি খাবার কত দ্রুত রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে তার পরিমাপ্ হল ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’। ফল, শষ্য, সবজি সবকিছুতেই কার্বোহাইড্রেট থাকে। তবে তা বিপাক হয় ভিন্ন গতিতে। কারণ তাদের ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’য়ের মাত্রা ভিন্ন। যেসব খাবারে শরীরে ধীরে ধীরে ভাঙে সেগুলো রক্তে শর্করার মাত্রায় তারতম্য আনে কম।
ডায়াবেটিকদের জন্য আদর্শ: যেসব খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’য়ের মাত্রা ৫৫ এর কম, সেগুলো রক্তে শর্করার মাত্রায় কম প্রভাব ফেলে বলে ধরা হয়। আর এই ধরনের খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আদর্শ। ৫৬ থেকে ৬৯ মাত্রার খাবারগুলো মাঝারি মাত্রার প্রভাব ফেলে আর ৭০ বা তারও বেশি মাত্রার খাবারগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় দ্রুত।
ভাত ও রুটির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স: ভাতের মাত্রা নির্ভর করে চালটা পলিশ করা হয়েছে কি না তার উপর। আর রুটির ক্ষেত্রে কোন ধরনের আটা দিয়ে বানানো হয়েছে তার উপর।
ভাত:
সব ডায়াবেটিস রোগীরাই ভাত খেতে পারবেন, তবে পরিমাণ মতো। সাদা চালের ভাতের চাইতে লাল বা বাদামি চালের ভাত ভালো। কারণ সাদা চাল পলিশ করা হয়। এই পলিশ করার প্রক্রিয়া চাল তার পুষ্টিগুণ হারায়। সাদা চালের ভাতে স্টার্চ বেশি তাই সহজেই হজম হয়ে যায়। অপরদিকে বাদামি কিংবা লাল চালের ভাতে থাকে বিভিন্ন খনিজ, ভিটামিন ও আঁশ, ফলে হজম হয় দেরিতে। বাদামি চালের ভাতের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’য়ের মাত্রা ৬৮ আর সাদা চালের ভাত ৭৩।
রুটি:
চালের আটা, গমের আটা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের আটা থেকে রুটি তৈরি হয়। গমের আটার রুটির ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’য়ের মাত্রা ৬২। বার্লি, ছোলা-মটর কিংবা ভুট্টার আটার রুটি আরও স্বাস্থ্যকর। ছোলা-মটর ও বেসনের আটার রুটির ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’য়ের মাত্রা সবচাইতে কম, ৫২।
আসল বিষয়:
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য বেসনের আটা কিংবা ‘হোল গ্রেইন’ রুটি হবে স্বাস্থ্যকর সিদ্ধান্ত। ভাতের ক্ষেত্রে বাদামি বা লাল চালের ভাত পরিমাণ মতো খেতে পারেন। সাদা চালের ভাতের ‘গ্লাইসেমিক ইনডেক্স’য়ের মাত্রা সবচাইতে বেশি তাই তা এড়িয়ে চলতে হবে।