দুর্নীতি রোধে কড়া পদক্ষেপের পথে হাঁটল রাজ্য স্বাস্থ্যদফতর। এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চালু করা অন্যতম জনমুখী ও জনপ্রিয় প্রকল্প স্বাস্থ্যসাথীতে আনা হল ‘জিও ট্যাগিং’ ব্যবস্থা। শুরুতে এই পরিকল্পনা পাইলট প্রজেক্ট আকারে ছিল। স্বাস্থ্যদফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রাজ্যজুড়ে স্বাস্থ্যসাথীতে যুক্ত সমস্ত প্রাইভেট হাসপাতালে চালু করতেই হবে ‘জিও ট্যাগিং’। সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে কোনও বেসরকারি হাসপাতালে রোগী পরিষেবার ‘রিয়েল টাইম’ তথ্য সংগ্রহ করা হবে ‘জিয়ো ট্যাগিং’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। স্বাস্থ্যসাথীর ট্রানজ়াকশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (টিএমএস) বা আর্থিক লেনদেনের সময়ে ব্যবহার করা হবে ওই রিয়েল টাইম তথ্য।
প্রসঙ্গত, ‘জিও ট্যাগিং’-এ একটি অ্যাপের মাধ্যমে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর ছবি তুলে পাঠাতে হবে অপারেশনের আগে, পরে ও ছুটির সময়। আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স ব্যবহার করে চলবে পুরো সিস্টেম। দ্বিতীয়ত, রোগীর নাম, হাসপাতালে নাম ও হাসপাতালে থাকার দিনক্ষণের পাশাপাশি ঠিক কোন জায়গা বা লোকেশনের ছবি তোলা হয়েছে, সেসব তথ্যও থাকবে। তৃতীয়ত, হাসপাতাল যেকোনও ধরনের অ্যান্ড্রয়েড নির্ভর মোবাইল ব্যবহার করতেই পারে। তবে অ্যাপ চলবে শুধুমাত্র হাসপাতালের ৫০ মিটারের মধ্যে। রোগীর ছবি, তথ্য, লোকেশন এবং যা যা তথ্য হাসপাতাল দিচ্ছে, সেগুলি যথাযথ কি না, তা যাচাই করবে এআই। তথ্যগুলি অসত্য প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও পদাধিকারীর বিরুদ্ধে আইনানুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিমার ক্লেম নিষ্পত্তির সময় টিপিএ বা দায়িত্বপ্রাপ্ত এজেন্সিকে দেখে নিতে হবে, রিয়েল টাইম ছবি এবং তথ্যাদি দেওয়া হয়েছে কিনা। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় তালিকাভুক্ত বেসরকারি হাসপাতালে উপভোক্তাদের ভর্তুকিযুক্ত পরিষেবা দেওয়া হয়। ওই ভর্তুকির টাকা পরে সরকার থেকে দেওয়া হয় হাসপাতালগুলিকে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রোগী পরিষেবার জন্য টাকা আদায়ের সময়ে তথ্য বিকৃত করে বর্ধিত টাকা দাবি করার সুযোগ থেকে যেত হাসপাতালগুলির। তাই এবার এই নতুন ব্যবস্থা চালু করছে রাজ্য।