টানা দুই বিশ্বকাপে স্পেনকে দেখতে হয়েছিল মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন স্পেন, কিন্তু ২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায়। ২০০২ সালে থেকেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের পরের বিশ্বকাপের প্রথমেই বিদায় নেওয়ার প্রথাকে ভাঙতে পারেনি ইনিয়েস্তার স্পেন। কিন্তু পেছনে ফিরে তাকানো কি আর পেশাদার ফুটবল দলের কাজ! স্পেনও সেই কাজটি করতে চাচ্ছে না। দলের প্রধান খেলোয়াড় ইনিয়েস্তাও ব্রাজিলের সেই দুঃসহ স্মৃতি ভুলে রাশিয়া বিশ্বকাপে ভাল কিছু করতে চান।
জিকিউ ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উঠে আসে বিশ্বকাপ নিয়ে ইনিয়েস্তার ভাবনাগুলো। ‘আমরা কখনোই ঐ পর্যায়ের ফুটবল খেলি না যেটা ব্রাজিল বিশ্বকাপে খেলেছিলাম। আমার মনে হয় না এর নির্দিষ্ট কোন কারণ ছিল যেটার কারণে এমনটা হয়েছে। আপনি নিজে যা অর্জন করেছেন তাকে মূল্যায়ন করতে হবে। বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া অনেকটাই অসম্ভব। এটা খুবই কঠিন কাজ।’
ব্রাজিল বিশ্বকাপের প্রসঙ্গ টেনে ইনিয়েস্তা বলেন, ‘ব্রাজিলে চার বছর আগে যা হয়ে তা ভুলে যেতে চাই। আমার মতে, ঐটা ছিল আবার নতুন করে শুরু করার তাড়না। আমরা রাশিয়াতে নির্দিষ্ট চিন্তা-ধারণা নিয়েই যাবো।’
২০১৮ বিশ্বকাপ খেলেই জাতীয় দল থেকে অবসরে যাবেন সদ্যই বার্সা ছাড়া এই ফুটবলার। নিজের দল নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের দারুণ একটি স্কোয়াড রয়েছে। তারুণ্য এবং অভিজ্ঞতার মিশেলে অসাধারণ একটি দল। নিজেদের ওজন বুঝে আমরা চলতে সক্ষম হয়েছি যার কারণে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, ফ্রান্সের মত দলের সঙ্গে আমাদেরকেও বিশ্বকাপের ফেবারিট ধরা হচ্ছে।’
প্রত্যেক বিশ্বকাপেই মাঝারি মানের দলগুলো অঘটন ঘটিয়ে বসে। এবারও যে ঘটবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত ইনিয়েস্তা। ‘প্রত্যেক বিশ্বকাপে কোন দেশ ভালো করে সবাইকে চমকে দেয়। আমি সবাইকে সমান শ্রদ্ধা করি।’
একটি কথা বেশ প্রচলিত, টমেটো ও মিডফিল্ডার—এই দুটি জিনিসের অভাব স্পেনে কখনোই ছিল না। এবারও সবচেয়ে শক্তিশালী মিডফিল্ড নিয়েই বিশ্বকাপে যাচ্ছে স্পেন। আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার কথা আগেই বলা হয়েছে, রয়েছেন চিরদিন ভরসার সার্জিও বুসকেটস, থিয়াগো আলকানতারা, ডেভিড সিলভা, ইসকো, কোকে, সাউল। নামগুলোয় একবার চোখ বুলালেই ভেসে ওঠে অনিন্দ্যসুন্দর ফুটবলের দৃশ্য। স্পেন যে এবার মিডফিল্ডে রাজত্ব করতে যাচ্ছে, সেটি একপ্রকার নিশ্চিত।
এবারের বিশ্বকাপই হতে যাচ্ছে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, সার্জিও বুসকেটস, সার্জিও রামোস, জেরার্ড পিকে, ডেভিড সিলভাদের শেষ বিশ্বকাপ। স্পেনের প্রথম স্বর্ণযুগের শেষ পতাকাধারীদের বিদায়ী উপহার দিতে বদ্ধপরিকর স্প্যানিশরা; যা বাড়তি অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে দলের জন্য।