“মহামেদ সালাহ ঘাইলী” , ছোট্ট করে সালাহ। ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি স্ট্রাইকার গ্যারি লিনেকারের ভাষায় ‘মিশরের রাজা’! ইনি ইজিপ্টের আন্তর্জাতিক ফুটবলার বর্তমানে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব লিভারপুলের হয়ে খেলেন। ২০১৭-১৮’র মরসুমে সালাহ’র দুর্দান্ত পারফরম্যান্স সবার নজর কেড়েছে।এই মরসুমে ইতিমধ্যে তিনি ৪৫টি গোল ও ১২ টি আসিস্ট করেছেন। প্রিমিয়ার লিগের ‘প্লেয়ার অফ দা ইয়ার’ এর খেতাবও পেয়েছেন। লিভারপুলকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ও ইজিপ্টকে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্ব কাপের মূল পর্বে পৌঁছনোর মূল কারিগর সালাহ। তার এই নজরকাড়া পারফরম্যান্স ২০১৯’এর ব্যালন ডি’ওর খেতাব জেতার লড়াইয়ে আরো এককদম এগিয়ে দিল মেসি-রোনাল্ডো-নেইমারদের থেকে। এবার হয়তো ব্যালন ডি-ওর জেতার লড়াই লিয়োনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না । লড়াই এই মুহূর্তে ত্রিমুখী! বর্তমানে বিশ্ব ফুটবলের দুই সেরা তারকার প্রতিদ্বন্দ্বীর নাম মহামেদ সালাহ।
গত এক দশকে পাঁচ বার করে ব্যালন ডি’ওর জিতেছেন মেসি ও রোনাল্ডো। কিন্তু এই বছর সালাহ’র অবিশ্বাস্য উত্থান পুরো ছবিটাই বদলে দিয়েছে।
সালাহ তার ফুটবল জীবন শুরু করেন ইজিপ্টের ক্লাব এল মোকাউলুনের হয়ে ২০১০ সালে। ২০১১ সালে তিনি যোগ দেন সুইজারল্যান্ডের ক্লাব এফ সি বাসেলে। তারপর ২০১৪ সালে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব চেলসিতে। ২০১৬ তে ইতালির ক্লাব এ এস রোমাতে। রোমার হয়ে তার দুরন্ত পারফরম্যান্স তাকে আবার ইউরোপের সেরা লিগ প্রিমিয়ার লিগে ফিরিয়ে আনে লিভারপুল ২০১৭ সালে। প্রথমবার প্রিমিয়ার লিগে চেলসির হয়ে সেই ভাবে দর্শকদের মনে ছাপ ফেলতে না পারলেও লিভারপুলের হয়ে ফিরে এসে তিনি সেটা করে ফেলেছেন। ২০০৪-০৫ এর জেররার্ড-বারোস-গার্সিয়ার সেই হারিয়ে যাওয়া লিভারপুলকে আবার আমরা ফিরে পেয়েছি সালাহ-মানে-ফিরমিনো দিয়ে। তবে সালাহ-ই মধ্যমণি। পাসিং থেকে ড্রিবলিং থেকে বল কন্ট্রোলিং থেকে আসিস্ট থেকে গোল করা সব বিষয়ে পারদর্শী।
অ্যানফিল্ডে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের প্রথম পর্বে এ এস রোমার বিরুদ্ধে সালাহ-র নেতৃত্বেই ঝ়ড় তুলেছিল লিভারপুল। রোমার বিরুদ্ধে সালাহ-র দু’টো গোলের মধ্যেই আর্জেন্তিনার অধিনায়কের ছায়া। উচ্ছ্বসিত গ্যারি লিনেকার টুইট করেছিলেন, “আবার শাসন করছে মিশরের রাজা। অবিশ্বাস্য ছন্দে রয়েছে সালাহ।” লিভারপুল ম্যানেজার য়ুর্গেন ক্লপ বলেছেন, ‘‘সালাহ দুর্ধর্ষ ফুটবলার। এই মুহূর্তে যে ও অসাধারণ ছন্দে রয়েছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।’’
ভক্তরা তাঁর নামকরণ করেছেন ‘মিশরের মেসি’।
তবে এখন দেখার বিষয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেতাব কি সালাহ লিভারপুল কে জেতাতে পারবেন? আর সালাহ-র হাত ধরে বিশ্বকাপে মিশর কত দূর যায় ?.. এটাই দেখার জন্য অধীর আগ্রহে গোটা ফুটবল দুনিয়া।