কোথায় সেই শান্তির প্রতিশ্রুতি? সব বেমালুম হাওয়া। তালিবান আছে তালিবানেই। মেয়েদের শিক্ষার অধিকার কার্যত ছিনিয়ে নিল আফগানিস্তানের জেহাদী সরকার। শনিবার থেকে খুলেছে সে দেশের উচ্চ প্রাথমিক স্কুলগুলি। ১৩-১৮ বছরের পড়ুয়াদের ক্লাসে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই নির্দেশিকায় ঠাঁই পায়নি ছাত্রীরা। অর্থাৎ শুধুমাত্র ছেলেদের বিদ্যালয়ে আসার কথা জানানো হয়েছে আফগানিস্তানের শিক্ষামন্ত্রকের তরফে। ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সি ছেলেমেয়েরা সেকেন্ডারি স্কুলের পড়ুয়া। শুক্রবার গভীর রাতে জারি করা নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ফের চালু হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। ফিরবে পড়ুয়া এবং শিক্ষকেরা। নির্দেশিকায় লেখা হয়েছে, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে। সমস্ত ছাত্র ও শিক্ষকরা ক্লাসে যোগ দিন।” সেই নির্দেশিকায় মেয়েদের কথা উল্লেখ না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই দানা বেঁধেছে বিতর্ক।
উল্লেখ্য, নয়ের দশকের তালিবানি জমানায় আফগান মেয়েরা স্কুলে যেতে পারত না। কিন্তু এবার ক্ষমতায় আসার পর তালিবান মুখপাত্র জানিয়েছিল, চিন্তা নেই। মেয়েদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে না। কিন্তু কাজে এবং কথায় যে বিন্দুমাত্র মিল নেই, তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল। সম্প্রতি তালিবানের মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ জানিয়েছে, মেয়েদের জন্য আলাদা স্কুল খোলা হবে। তবে কবে তা হবে, আদৌ হবে কি না, মেয়েরা ভবিষ্যতে স্কুলে পড়ার সুযোগ পাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েই গিয়েছে। বিগত নয়ের দশকের পরবর্তী সময় মেয়েদের শিক্ষার পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছিল। নারীশিক্ষার হার প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৩০ শতাংশ ছুঁয়েছিল। প্রাথমিক স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের সংখ্যা শূন্য থেকে পৌঁছে গিয়েছিল ২৫ লক্ষে। বর্তমান তালিবান জমানায় প্রাথমিকে স্কুলে ছাত্রীদের যাওয়ার উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু সেকেন্ডারি স্কুলে আপাতত মেয়েরা যেতে পারছে না, তা নিশ্চিত। কাজে ফিরতে পারছেন না শিক্ষিকারাও।