আমন্ত্রণ পাওয়ার পরেও বিদেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র না পাওয়ায় শেষ মুহূর্তে চীনের এক চলচ্চিত্র উৎসবে যাওয়া বাতিল করতে হল তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়কে। বিষয়টিকে তাঁর মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে উল্লেখ করে লোকসভার চলতি অধিবেশনে তা উত্থাপনের ইঙ্গিত দিয়েছেন শতাব্দী৷ একই সঙ্গে তিনি বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে সাক্ষাৎ করে অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করছেন।
যে ভাবে বিদেশ মন্ত্রক শতাব্দীর চীন যাত্রা আটকেছে, তাতে বিস্মিত তৃণমূলের সংসদীয় দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁর কথায়, ‘শতাব্দী তো এই প্রথম বিদেশ যাচ্ছে না৷ বহু বার গিয়েছে৷ তবু কেন ব্যক্তিগত সফরে বাধা দেওয়া হল, তা রীতিমত বিস্ময়কর৷’ তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, ‘শতাব্দী রায়ের অবিলম্বে মামলা করা উচিত৷ ওঁকে তা বলেওছি৷’
বিদেশ যাত্রা নিয়ে সমস্যায় তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারও৷ লন্ডনে পাঠরত ছেলের কাছে যেতে আগ্রহী কাকলিকে ভিসা-সংক্রান্ত অনুমতি দিতে গড়িমসি করছে কেন্দ্র, সোমবার নয়াদিল্লীতে এই অভিযোগ করেছেন কাকলি নিজেই৷ এর আগে প্রথম মোদী সরকারের আমলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চীন সফরের অনুমতিও বাতিল করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার৷ কেন ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়নি, তা নিয়েও সরকারি ভাবে কোনও কারণ দেখায়নি কেন্দ্র৷
প্রসঙ্গত, অক্টোবরের মাঝামাঝি চীনের ‘সিল্ক রোড চলচ্চিত্র উৎসব’-এ যোগ দেওয়ার কথা ছিল শতাব্দীর৷ উদ্যোক্তারাই সব দায়িত্ব বহন করেছিলেন৷ গেস্ট কার্ডও পাঠানো হয়েছিল৷ এর পরেই শতাব্দী দিল্লীর চিনা দূতাবাসে ভিসার আবেদন করেন৷ সেখান থেকে জানানো হয় সাংসদ হিসেবে তিনি যে বিদেশ যেতে পারেন, সেই সংক্রান্ত সরকারি অনুমতি লাগবে। শতাব্দী নির্ধারিত রাজনৈতিক ছাড়পত্রের অনুমতি চান কেন্দ্রের থেকে৷ পরে চীন দূতাবাস সেই অনুমতি ছাড়াই শতাব্দীকে টুরিস্ট ভিসা দেয়, যার মেয়াদ ছিল ১৪ অক্টোবর থেকে ১৪ জানুয়ারি, ২০২০৷ এরই মাঝে শতাব্দীর থেকে বিদেশি মুদ্রা সংক্রান্ত ছাড়পত্র চায় বিদেশ মন্ত্রক৷ তৃণমূল সাংসদ সেই ছাড়পত্র সরকারি স্তরে পাঠিয়ে দেন৷ ১৫ অক্টোবর তাঁর চীনের বিমানে ওঠার কথা ছিল৷ ১৪ অক্টোবর তাকে বিদেশ মন্ত্রক থেকে ইমেল করে জানানো হয়, সরকার তাঁর রাজনৈতিক ছাড়পত্র বাতিল করছে৷
হতাশ শতাব্দী এদিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এমন একটা সময় আমার চীন সফরের অনুমতি বাতিল করা হল, যখন চিনের প্রেসিডেন্ট এ দেশে এসেছিলেন৷ কেন আমাকে ছাড়পত্র দেওয়া হল না, তা নিয়ে একটি কথাও বলেনি বিদেশ মন্ত্রক৷ বার বার ই-মেল করেছি, ফোন করেছি, জবাব পাইনি।’ এইভাবে বারবার বিরোধী দল নেতা-নেত্রীদের বিদেশ যাত্রা আটকে যাচ্ছে বিদেশ মন্ত্রকের লাল ফিতেয়।