যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের চার নম্বর গেট দিয়ে ঢুকতেই ‘তড়িৎ কমিউনিকেশন’। একটি বই, খাতা, পেনসিলের দোকান। গত ১৯ সেপ্টেম্বর, বিশ্ববিদ্যালয়ে তাণ্ডবের সময় এবিভিপি–র হাত থেকে রেহাই পায়নি বিশেষভাবে সক্ষম এই প্রৌঢ়ের দোকানও। ১৯৯২ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর পাস করেন তিনি। ছোটবেলাতেই টিউমারে আক্রান্ত হয়ে বাঁ পা হারান। পাশ করার দুবছর পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে এবং সাহায্যে চার নম্বর গেটের কাছে দোকানটি শুরু করেন তড়িৎবরণ।
তাঁর অভিযোগ, গত ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দিয়ে একদল দুষ্কৃতী তাঁর দোকানের জানলার কাচ বাঁশ, লাঠি দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়। তারপরই দোকান থেকে পেন ড্রাইভ, সিডি, পেন, পেন্সিল সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র লুঠ হয়ে যায়।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিভিপি–র সদস্যদের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারকে সাহায্যে এগিয়ে এলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীরা। ক্ষতিপূরণ হিসেবে যাদবপুরের প্রাক্তনীরা নিজেরাই অর্থ জোগাড় করে ৩০০০ টাকা তাঁদের প্রিয় ‘তড়িৎদা’–র হাতে তুলে দেন। চুরি যাওয়া সামগ্রীর ক্ষতিপূরণ পেয়ে তড়িৎ বাবু জানান, “এটাই আমার সেরা পুজোর উপহার। প্রাক্তন ছাত্ররা আমায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, যে কোনও বিপদে তাঁরা আমার পাশেই থাকবেন”।
‘জেইউ এক্স’ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের ওই সংগঠনের তরফে সৌরীশ ঘোষ বললেন, “আমরা বলতে চেয়েছিলাম, প্রাক্তনীরা সবাই তড়িৎদার পাশে আছি, যাঁর উপর এবিভিপি–র দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছিল। আমার মনে হয় এই সব দুষ্কৃতীদের বাধা দিতে একজোট হওয়া উচিত, যাঁরা একজন প্রতিবন্ধীকেও রেহাই দেয় না”।