কোয়েস ইস্ট বেঙ্গলে কোচিং শুরু করার পর এখনও ট্রফি জয়ের স্বাদ পাননি স্প্যানিশ কোচ আলেহান্দ্রো। বুধবার সল্টলেক স্টেডিয়ামে ডুরান্ড কাপের প্রথম সেমি-ফাইনাল ম্যাচে গোকুলাম কেরল এফসি’র বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে আলেজান্দ্রোর ‘পাখির চোখ’ ট্রফির দিকেই। যে টুর্নামেন্টকে এতদিন আই লিগের প্রস্তুতি হিসেবে দেখেছিলেন, সেই শতাব্দীপ্রাচীন টুর্নামেন্টের ট্রফি জয়ের কাছাকাছি এসে গা-ঝাড়া দিয়ে উঠেছেন একদা হোসে মরিনহোর সহকারী।
মঙ্গলবার সকালে সল্টলেক স্টেডিয়ামের প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডে দলের অনুশীলনে বেশ খোশমেজাজে ছিলেন আলেহান্দ্রো। মিডিয়ার সঙ্গে কিছুক্ষণ আড্ডা দিলেন। কলকাতার খাওয়া-দাওয়া ছিল তাঁর চর্চার বিষয়। এই শহরের সঙ্গে মাদ্রিদের মিল খুঁজে পেয়েছেন তিনি। খুবই প্রাণবন্ত দুটি শহর। দুই শহরের ফুটবল অনুরাগীরা যথেষ্ট আকর্ষণীয়। একই সঙ্গে কলকাতার খাবার দারুণ প্রিয় হয়ে উঠেছে আলেহান্দ্রোর কাছে। যেমন চুটিয়ে রসগোল্লা খেয়েছেন। মাংস, ডাল, লুচির সঙ্গে তাঁর বেশ ভাব জমে গিয়েছে। তবে বিদেশি কোচের এখন ইলিশ মাছ খাওয়া হয়ে ওঠেনি। ফুরফুরে মেজাজে থাকা আলেহান্দ্রো এদিন বললেন, ‘ম্যাচটা জয়ের লক্ষ্যেই খেলব। আমার দল লক্ষ্যে স্থির। সেমি-ফাইনালে ওঠার পর অন্য তিনটি দলই ট্রফি জয়ের জন্য তৈরি হচ্ছে। আমরাও প্রস্তুত। তবে আমার ফুটবল দর্শন একটু অন্যরকম। জীবনে অনেক ম্যাচ জিতেছি, আবার হেরেছিও। জিতলে আবেগ আমাকে তাড়া করে না। তাই হারলেও জীবন থেমে যাবে না।’
অন্যদিকে গোকুলমের শক্তি বাড়াচ্ছেন ক্যারিবিয়ান স্ট্রাইকার মার্কাস জোসেফ। এ বার কলকাতায় ডুরান্ড কাপে খেলতে এসেও তিনি গোল করে চলেছেন যন্ত্রের মতো। তিন ম্যাচে জোড়া হ্যাটট্রিক-সহ আট গোল তাঁর। যার সুবাদে এগারো গোল কেরলের দলটির। মঙ্গলবার সকালে যুবভারতী সংলগ্ন অনুশীলন মাঠে রীতিমতো হুমকির সুর মার্কাসের গলায়। বলেন, ‘‘গোল করাই আমার কাজ। সেমিফাইনালেও গোল করব।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘আট গোল করেছি এখনও পর্যন্ত। বাকি দুই ম্যাচে আরও সাত গোল করতে চাই। ডুরান্ডে ১৫ গোল করাই আমার লক্ষ্য। ইস্টবেঙ্গল রক্ষণ বুধবার সামান্য ভুল করলেই শাস্তি ভোগ করবে। আর সেই শাস্তিটা দেব আমি।’’
ভাদ্র মাসের চড়া রোদে যখন মার্কাস এ কথা বলছেন, তখন পাশের মাঠে সদ্য দলবল নিয়ে নেমেছেন ইস্টবেঙ্গলের স্পেনীয় কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস। মার্কাসের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স সম্পর্কে অবহিত থাকলেও বিপক্ষ স্ট্রাইকারের এ রকম গরমাগরম বিবৃতির ব্যাপারে জানতেন না। প্রসঙ্গ উঠতেই ইস্টবেঙ্গল কোচ পাল্টা বলেন, ‘‘ওদের সম্পর্কে সব হোমওয়র্কই করেছি। মাঠে নামলে ইস্টবেঙ্গল ম্যাচটা জিতেই ফিরবে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘মার্কাসকে নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা তৈরিই আছে। ওর বিরুদ্ধে কী ভাবে রক্ষণ সামলাতে হবে, তা নিয়ে আজ ছেলেদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এ বার মাঠে নেমে সেই পরিকল্পনা কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিগত দ্বৈরথ জেতার পালা ছেলেদের।’’